ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঐতিহ্যবাহী ঢেমঢেমিয়া কালীর মেলা

জমে উঠেছে ঘোড়া-মহিষ বেচাকেনা

জমে উঠেছে ঘোড়া-মহিষ বেচাকেনা

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ঢেমঢেমিয়া কালীর মেলায় ঘোড়া ও মহিষ কেনাবেচা জমে উঠেছে। ঘোড়া সর্বোচ্চ ৪ লাখ আর মহিষ সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ লাখে বিক্রি হওয়ার খবর জানা গেছে। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এ মেলায় ১ হাজার ঘোড়া ও কয়েক হাজার মহিষ উঠেছে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শেষ সীমান্তে পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বৈরবাড়ি, চাপাপাড়া ও হিরামণি মৌজায় উত্তরবঙ্গজুড়ে সর্বাধিক প্রশংসিত ও প্রসিদ্ধ ঢেমঢেমিয়া কালীর মেলার অবস্থান। সেখানে মিলিত হয়েছে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা। পাশেই অবস্থান নীলফামারী জেলার। মেলা শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই ঘোড়া ও মহিষ কেনাবেচা জমজমাটভাবে চলতে থাকে। মূলত ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর, নওগাঁ থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন বিভিন্ন জাতের ঘোড়া ও মহিষ নিয়ে আসেন এ মেলায়। মেলার ঐতিহ্য হচ্ছে ঘোড়া ও মহিষ ছাড়া গরু কিংবা ছাগল বিক্রি হয় না। প্রতিবছর কার্তিক মাসের আমাবশ্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্যামা পূজায় এ মেলার আয়োজন করা হয়। সাত দিন ধরে পূজা-অর্চনা হলেও মেলা চলে মাসব্যাপী। বাংলা ১২৮০ সাল থেকে এই এলাকার মানুষের বিনোদনের একমাত্র ঠিকানা হয়ে উঠেছে ঢেমঢেমিয়া কালী মেলা। মেলায় পারলে ঠেকাও, কিরণমালা, সুন্দরী, পঙ্খিরাজ, বাহাদুর, রাজা, রানি, সম্রাট সোনারতরি, বুলেট, বিজলী রানী, কাজলী, রাজা নামের বাহারি রঙের ঘোড়ার দেখা মেলে। এবার মেলায় বড় ও দক্ষতাসম্পন্ন ঘোড়া নিয়ে এসেছিলেন নীলফামারীর আব্দুল্লাহ-আল কাফী। তিনি ভুটানি তাজি জাতের পঙ্খিরাজের দাম চার লাখ বিক্রি করেছেন। ফাঁকা মাঠে কসরত ও বিভিন্ন কৌশল দেখানোর পর ঘোড়ার দরদাম ঠিক হয়। যার যেমন গুন তার তেমন দাম। দরদাম করেই পছন্দের ঘোড়াটি ক্রয় করছেন ক্রেতারা। ঘোড়ার গাড়ি, লাগাম, সিট, ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের ব্যবহৃত লাঙল-জোয়াল বিক্রি হলেও এবার মেলায় ঘোড়ার চাহিদা বেশি। জাতভেদে প্রতিটি ঘোড়া ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেলার আরেক পাশে হাজার কালো কুচকুচে মহিষ সারি সারি বাঁধা। পছন্দের মহিষ কিনতে ছোটাছুটি করছেন ক্রেতারা। তবে এবার মহিষের চাহিদা থাকলেও দাম কম হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বিক্রেতারা। বীরগঞ্জের বাহাদুর বাজারের মহিষ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, পাঁচটি মহিষ মেলায় এনেছি। দুটি মহিষ বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে একটি বিক্রি করেছি সাড়ে ৩ লাখ টাকায়। তিনি আরো বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে এবার মহিষের ক্রেতা কিছুটা কম। তা না হলে আমার বাকি তিনটি মহিষও বিক্রি হয়ে যেত। ঠাকুরগাঁও থেকে ৯টি মহিষ নিয়ে মেলায় এসেছেন ভবেশ রায়। তার মহিষ আকারভেদে দাম হাঁকিয়েছেন ২-৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে পাঁচটি মহিষ বিক্রি হয়েছে। মেলার রশিদ লেখাক পরিতোষ চন্দ্র রায় বলেন, মেলায় প্রতি ঘোড়ায় ৫০০ টাকা ও মহিষে ১৫০০ টাকা জমা নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত