হবিগঞ্জের মাধবপুরে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টমটম। প্রতিদিনই এসব রিকশা চলতে দেখা যাচ্ছে মাধবপুর উপজেলা সদরের পৌরসভা এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ বিভিন্ন অলিতে গলিতে। পৌরসভা ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো চলাচলের ফলে বেড়ে চলছে যানযট। দূরপাল্লার যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে না ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। অটোরিকশাগুলোর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। অনেক অসুস্থ রোগী ও হাসপাতাল পথযাত্রীরা অটোরিকশার এলোমেলো চলাফেরা ও যানজটের কারণে জরুরিসেবা গ্রহণের জন্য অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য যানবাহনে করে হাসপাতালে যেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অটোরিকশাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকেও আদায় করছে বাড়তি ভাড়া। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো বৈদ্যুতিক চার্জের মাধ্যমে চলে। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় ফলে প্রতিনিয়তই বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। যার ফলে সমগ্র উপজেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে মাধবপুর নোয়াপায়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির। এই ব্যাপারে মাধবপুর উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নোয়াপাড়া জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আবুল কাশেম বলেন, অটোরিকশা চার্জের ফলে বিদ্যুতের লোড বাড়ছে। তবে অটোরিকশা চার্জিং নিষিদ্ধকরণের ব্যাপারে সরকারিভাবে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা এখনো আসেনি। এলোপাতাড়ি অটোরিকশা চার্জ করা অবৈধ। তবে বর্তমানে কেউ যদি অটোরিকশা চার্জ করতে চায় তাহলে তাকে আলাদাভাবে চার্জিং পাওয়ার স্টেশন করে চার্জ করতে হবে। অটোরিকশার উপদ্রবের ব্যাপারে জানতে চাইলে, মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ী ওয়াসিম আকরাম বলেন, অটোরিকশার সংখ্যা বেশি হওয়ায় ও তাদের বেপরোয়া চলাচলের জন্য প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে, বাজারের ভিতরে হাটবাজার করার জন্য চলাফেরা করতে কষ্ট হয়, এছাড়া ও কিছু কিছু ব্যবসায়ী তাদের দোকানের সামনে রাস্তার উপরে অবৈধভাবে ফলের দোকান, ডিমের দোকানসহ নানা ধরনের দোকান বসিয়ে রেখেছে, বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে নিচ্ছে অর্থ, এসব দোকানের কারণেও বাজারে বাড়ছে তীব্র যানযট। আরেক ব্যবসায়ী হাফেজ শাহ আলম জানান, এসব অটোরিকশাগুলোকে একটা নিয়মের ভিতরে নিয়ে আসা দরকার না হলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে, আর রাস্তার উপরে যেসব দোকানদার দোকান বসিয়ে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। মাধবপুর পৌরসভায় অটোরিকশা দ্বারা সৃষ্ট যানযট নিরসনের ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র মো. হাবিবুর রহমান মানিক বলেন, এরই মধ্যে তাদের বেপরোয়া চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লাইসেন্সের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এলাকায় মাইকিং করে জানানো হয়েছে। সব অটোরিকশা ও টমটমগুলোকে দুটি আলাদা আলাদা সময়ে চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে। ফলে যানযট ও দুর্ঘটনা কমবে বলে আশা করি। এইসব অটোরিকশা চালাতে পরিশ্রম কম লাগে বিধায় অনেকেই কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়ে চলে আসছেন রিকশা চালাতে। ফলে দেখা দিচ্ছে শ্রমিক সংকট। যানযট নিরসন ও যানবাহনের নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে মাধবপুর থানার ট্রাফিক জোনের ওসি মো. রমজান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ পৌর শহরসহ অন্যান্য জায়গায় অটোরিকশা ও টমটম চলাচল বেড়েছে। আমরা উপজেলার যানজট নিরসনে কাজ করছি।
