ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কৃষকের ঘরে নবান্নের ধান

কৃষকের ঘরে নবান্নের ধান

খেতজুড়ে এখন কৃষকের সোনার ধান। ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবের আমেজ। ধানকাটায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকদের। ঘরের আঙিনায় সে সোনালি ধানে ব্যস্ততা বেড়েছে ঘরের কৃষানি নারীদেরও। চলতি আমন মৌসুমে ধানের আবাদ হওয়ায় কৃষকের মনে খুশি অনুভূত হচ্ছে। তবে দাম নিয়ে একটু দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। তবে আশা করছেন ধানের ভালো দাম পাবেন তারা। এ চিত্র উত্তরের পঞ্চগড়ের। তেঁতুলিয়া, শালবাহান, জেলার সদর উপজেলার চাকলাহাট ও হাফিজাবাদসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তারা শ্রমিক নিয়ে কাটছেন মাঠের দান। ধান কাটা হয়ে গেলে কেউ খেতে শুকাচ্ছেন, কেউ খেত সরাসরি কেটে ভ্যান, মহিষের গাড়ি, ট্রলিতে বাড়িতে নিয়ে এনে মাড়াই করছেন চাষিরা।

বাড়ির উঠানজুড়ে নতুন ধানের মণ্ডম গন্ধ। কেউ কেউ ধান মাড়াই হয়ে গেলে চালের গুঁড়া তৈরি করছেন। এসব গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে হরেক রকমের পিঠে-পুলি, সুস্বাদু পায়েস। পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার আমন মৌসুমে ১ লাখ ১০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে তেঁতুলিয়া উপজেলায় ১১ হাজার ২৪০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ২৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর, আটোয়ারী ১৬ হাজার ৮৭৫ হেক্টর, বোদায় ২৪ হাজার ৩০ হেক্টর ও দেবীগঞ্জে ২৩ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সময়োপযোগী বৃষ্টি ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ আমন চাষে সুফল মিলেছে। তেঁতুলিয়া সদর, তিরনইহাট এলাকার আব্দুল জব্বার, সাইদুল, মকসেদ আলীসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, এবার ফলন ভালো হয়েছে। যদিও ধানে এবার পোকা কিছুটা সমস্যা করেছে। তবে ভালো ফলন হয়েছে। দাম নিয়ে একটু চিন্তায় আছি। আশা করছি দাম পেলে লাভ করতে পারব। তেঁতুলিয়া সরকারি কলেজের প্রভাষক ও কথা সাহিত্যিক হাফিজ উদ্দীন বলেন, শীত মৌসুম মানেই বাংলার ঘরে ঘরে নতুন ধানের নবান্নের উৎসব। এ নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ। তবে প্রযুক্তির উৎকর্ষে দিন দিন গ্রামগুলোতে শহরের সংস্কৃতির প্রবাহে গ্রাম বাংলার এই নবান্ন উৎসব যেন হারিয়ে যেতে বসেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ আলম মিয়া বলেন, এবার মৌসুমে পঞ্চগড় জেলায় ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান আবাদ। প্রায় ৭০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। এ বছর স্বর্ণা, ব্রিধান-৯৩, ব্রি-৮৭, ব্রি-৭৫, হাইব্রিড আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে স্বর্ণা আবাদ হয়েছে ৬০ ভাগ। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি বাজারে ভালো দাম পেলে কৃষক লাভবান হবে। নতুন ধানে কৃষকের ঘরে ঘরে এখন নবান্ন উৎসব। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিতে। আশা করছি আগামী বছরও কৃষি সম্প্রসারণের দিকনির্দেশনা ও সরকারের সহযোগিতায় কৃষক আরো ভালো ফলন পাবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত