পর্যটকশূন্য চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই ধাপে ধাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের অবরোধের প্রভাবে চায়ের রাজ্যে মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্প হোঁচট খাচ্ছে। বছরের এই সময়ে জেলার অভিজাত হোটেলসহ শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ অধিকাংশই রয়েছে ফাঁকা। জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে আশানুরূপ পর্যটকদের দেখা নেই। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটকরাই শ্রীমঙ্গলের লেবু, আনারস, চা, মণিপুরি শাড়িসহ হাতে বানানো বিভিন্ন সামগ্রীর মূল ক্রেতা। কিন্তু অবরোধের কারণে সবখানেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই পর্যটক পাচ্ছেন না বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পর্যটন শিল্পে জড়িতরা জানান, চলমান অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকেরা পথে গণপরিবহন না পাওয়া ও রাস্তাঘাটে সংঘাত, সংঘর্ষের কথা চিন্তা করে কেউ ঘরের বাইরে বের হতে চাচ্ছেন না। অনেকেই আগাম হোটেল বুকিং বাতিলও করে দিয়েছেন। তাই খালি পড়ে আছে এখানকার অধিকাংশ রিসোর্ট, হোটেল-মোটেলগুলো। এতে পর্যটন শিল্প আবারো ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে জানান তারা। বছরের অন্যসময়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মূল ফটকে দায়িত্ব পালনে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয় ফজল মিয়া ও সিদ্দিক মিয়ার। তারা জানান, এখন পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। আর যারা আসছেন তাদের বেশিরভাগই স্থানীয়। তারা এখন অলস সময় পার করছেন। শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ রোডের টং দোকানদার রুহুল আমিন বলেন, পর্যটক নেই তো বেচাকেনা নেই। বেশ কয়েকদিন ধরে সারা দেশে অবরোধ চালায় আমাদের এখানে পর্যটক নেই ব্যবসাও নেই। স্থানীয় পর্যটকদের নিয়ে গত সপ্তাহে মাত্র একটি ট্রিপ দিয়েছেন জানিয়ে চান্দের গাড়ির চালক মো. আলমগীরের বলেন, সপ্তাহের শেষে মা, স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে ৫ জনের সংসারের খরচ চালাতে গিয়ে দোকান বাকি বাড়ছে। এখন কি করব? ভেবে পাচ্ছি না। শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক এস কে দাস সুমন বলেন, শুধু হোটেল-মোটেল নয়, জেলার কৃষিপণ্য ও চা-ব্যবসায়ও পর্যটন খাতের ওপর নির্ভরশীল। চলমান হরতাল অবরোধে পর্যটনশিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ধাপে ধাপে চলা অবরোধের কারণে পর্যটন মৌসুমের শুরু দিকেই হোঁচট খাচ্ছে পর্যটন শিল্প জানিয়ে শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ বলেন, সাধারণত এ সময়েই পর্যটকরা এখানে আসতে চান। কিন্তু নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তারা এখন আসতে চাচ্ছেন না। শ্রীমঙ্গলের ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে পর্যটকরা ঘুরতে বের হচ্ছেন না। পাশাপাশি তারা নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অগ্রিম বুকিং বাতিল করছেন। ফলে পর্যটনের শহর শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।