তালায় বিলুপ্তির পথে প্রাচীন আমলের এক গম্বুজ মসজিদ

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

তালা উপজেলার শাহাজাদপুর গ্রামের প্রাচীন আমলের গম্বুজ মসজিদটি সংস্কারের অভাবে প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে প্রায় ৪০০ বছরের পুরোনো এই মসজিদটিকে বর্তমান প্রজন্ম বা এর আগের কয়েক প্রজন্মের কেউ নামাজ পড়ার কোনো দৃশ্য না দেখলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। উপজেলার সমীন্তবর্তী এলাকা খেশরা ইউনিয়নের শাহাজাদপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পুরোনো এই মসজিদের স্তম্ভটি চুন-সুরকি ও ছোট ছোট ইটের তৈরি। এতে একটি গম্বুজ, চারটি স্তম্ভ, একটি দরজা ও দুটি জানালা রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এই এলাকাটিতে এক সময় জঙ্গল ছিল। কোনো জনবসতি ছিল না এখানে। পরবর্তীতে হাপুশাহ্ ও টাপুশাহ্ নামের দুজন বুজুর্গের আগমন ঘটে এই উপকূলে। দুই বুজুর্গের আগমনের পর এই জঙ্গলে একটি মসজিদ তৈরি হয়। সেখানে তারা আল্লাহর ইবাদত করতেন। ধীরে ধীরে এই অঞ্চলে লোকজনের যাতায়াত শুরু হয় এবং বুজুর্গদের নেতৃত্বে জনবসতি গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে তাদের নামের ‘শাহ্’ অংশ অনুসারে জনপদের নাম রাখা হয় শাহজাদপুর। স্থানীয় মুজিবুর রহমান মোড়ল জানান, বংশ পরম্পরায় মুখোগল্পে শুনে এসেছি, এখানে এক সময় নামাজ হতো, তবে আমার পূর্ব পুরুষদের কেউ এখানে কাউকে নিজ চোখে নামাজ পড়তে দেখেনি। বজলুর রহমান মোড়ল নামের আরেকজন জানান, দাদাদের মুখে গল্প শুনেছি কোনো এক সময়ে এখানে খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাতি ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনকে ঘিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালিত হতো। স্থানীয় বাহাউদ্দীন মোড়ল জানান, দাদার মুখে গল্প শুনেছি, সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলটি একটি দ্বীপ ছিল। তৎকালীন সময়ে দুজন বুজুর্গ এখানে এসে বসবাস শুরু করেন। তাদের নামে গ্রামের নাম হয় শাহজাদপুর। আমার বাবা, দাদারাও বাবা-চাচাদের কাছ থেকে একি গল্প শুনে এসেছেন।

তবে কেউ কখনও এখানে কাউকে নামাজ পড়তে দেখেননি। তিনি জানান, সংস্কারের অভাবে মসজিদটি ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যথাযথ পরিচর্যা করলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও গল্পটি জমা হয়ে থাকবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় প্রধান আফরোজা খান মিতা জানান, স্থানটির নাম শুনেছি, তবে এখনো পরিদর্শন করা হয়নি। নামটি তালিকায় রেখেছি। এমন স্থান বাংলাদেশে অনেক রয়েছে। আমরা চাইলেও একযোগে কাজ করতে পারি না। ধীরে ধীরে কাজ করা হবে।