নরসিংদীর রায়পুরায় ১নং রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুরোনো একতলা ভবনে দ্বিতল ভবন নির্মাণের ১ বছরের মাথায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সরকারের ৩১ লাখ ৭৩ হাজারের অধিক টাকা গচ্চা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার পর বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপজেলার পৌর এলাকার তাত্তাকান্দায় ১নং রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। গত সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে দুটি টিনশেট ঘরে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এদিকে বাইর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই দৃষ্টিনন্দন দোতলা স্কুল ভবনটি পরিত্যক্ত। রঙিন দেওয়ালজুড়ে আঁকা বর্ণমালা, ফুল, পাখি ও কবি সাহিত্যিকদের ছবি। শ্রেণিকক্ষ ও দোতলার কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ। ভবন ময়লা-আবর্জনা পরিপূর্ণ। নিচ তলায় ভেতর ও বাইরে বিমে একাধিক ফাটল। কংক্রিট খসে পড়েছে দেখা যাচ্ছে রড। ভবনে বিভিন্ন স্থানে ফাটল। জানা যায়, রায়পুরা পৌর শহরে তাত্তাকান্দায় ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০১ সালে এক তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পেলেতে দেখা দেয় শ্রেণিকক্ষ সংকট। পরে তা নিরসনে (পিইডিপি-৩) প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে ৩১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় তলা ভবন নির্মাণের কাজ পান স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ শেষে সংশ্লিষ্টদের হাতে ভবনটি হস্তান্তর করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুলের নিচতলা আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তা সত্ত্বেও দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়।
১ বছর যেতে না যেতেই নিচ তলায় দেখা দেয় ফাটল। পরে স্কুল ভবনটি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। এবং সেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার নিষেধ করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও নিচ তলায় অফিস হিসাবে একটি কক্ষ ব্যবহার করছেন শিক্ষকরা। পরিত্যক্ত ভবনের দু’পাশে দুইটি টিনশেট ঘরের তিনটি কক্ষে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণির ২২০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। স্থানীয় ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, আগেই নিচতলা ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছিল। তা সত্ত্বেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সরকারি লাখ লাখ টাকার অর্থ অপচয় হওয়ার পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।