ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তেলিয়াপাড়া চা-বাগান স্মৃতিসৌধ এলাকা এখন পিকনিক স্পট

তেলিয়াপাড়া চা-বাগান স্মৃতিসৌধ এলাকা এখন পিকনিক স্পট

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে স্মৃতিবিজড়িত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা-বাগান স্মৃতিসৌধ এলাকা আকর্ষণীয় পিকনিক স্পটে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঐতিহাসিক চা-বাগান স্মৃতিসৌধ এলাকায় দর্শনার্থীরা এ স্থানটি দেখার জন্য ভিড় করে। ঢাকা সিলেট মহাসড়ক মুক্তিযুদ্ধ চত্বর এলাকা ও তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন থেকে ৪ কিলোমিটার অভ্যন্তরে এ স্থানটির অবস্থান।

সুরমা চা-বাগানের ভেতর দিয়ে তেলিয়াপাড়া চা-বাগান ম্যানেজার বাংলো সংলগ্ন পূর্ব পাশে স্বাধীনতার যুদ্ধকালীন সময়ের এক অনন্য স্মৃতি ধারণ করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে এই স্মৃতিসৌধ। বর্তমান সরকারের আমলে স্মৃতিসৌধ ও আশপাশ এলাকায় সংস্কার করায় স্মৃতিসৌধটি নতুন রূপ ধারণ করেছে। স্মৃতিসৌধের কাছেই নয়নাবিরাম লেক। লাল শাপলা ও বাগানের অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্য সহজেই দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে এ স্থানে দর্শনার্থী ও ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা পিকনিক করার জন্য প্রতিনিয়ত আসছে। রাইফেলের বুলেট আকৃতির স্মৃতিসৌধের সোনালী রং রোদের উজ্জ্বল আলোতে ঝলমল করে। স্মৃতিসৌধের প্রবেশ পথের দুই পাশে কবি শামসুর রহমানের ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতার পঙ্ক্তিমালা লেখা রয়েছে। বেদির পূর্ব পাশে লাগানো ফলকে লেখা রয়েছে ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে স্মৃতিসৌধ’। স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন ১৯৭৫ খ্রিঃ তৎকালীন ৩নং সেক্টর কমান্ডার সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম। দক্ষিণ দিকে লাগানো ফলকে লেখা রয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ১৯৭১-এ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন, মুক্তিবাহিনীর আনুষ্ঠানিক প্রথম সদর দপ্তর, তেলিয়াপাড়া বাশঁবাড়ি। এছাড়া ফলকের নামের তালিকা রয়েছে রাজনৈতিক নেতা সাবেক সেনা ও সরকারি কর্মকর্তা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নাম। এখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর বণ্টন করা হয়।

এ স্থান থেকে মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করা ছাড়াও চা-বাগানে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বড় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ম্যানেজার বাংলোসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ছিল মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাদের পদচারণায় মুখরিত। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক দিপংকর সিনহা এই স্মৃতিসৌধ রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। এ স্থানটি দর্শনার্থীদের নিকট খুবই আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে স্মৃতিসৌধ এলাকায় সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ডাকবাংলোটি মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর হিসেবে রূপান্তরিত করার। কিন্তু কয়েক যুগ পার হয়ে গেলেও আজও তা জাদুঘরে রূপ নেয়নি। এতে করে মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত