ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ডলার সংকটে এলসি কমেছে

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি অর্ধেকের কম

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি অর্ধেকের কম

দেশে ডলার সংকটে এলসি খুলতে বিভিন্ন বাঁধা বেনাপোল দিয়ে আমদানি নেমে এসেছে। বেনাপোলের সি অ্যান্ড এফ ব্যবসায়ী ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে বেনাপোলে সুপারেনটেনডেন্ট ও ইন্সপেক্টর সবাই নতুন হওয়ায় সমস্যা বেশি হচ্ছে। এসব কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পণ্যের এইচএস কোড ও ভ্যালু নিয়ে জটিলতার কারণে রাজস্ব আদায় কমে গেছে। দেশে ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে না পারায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্য অর্ধেকে নেমে এসেছে। আমদানি কম হওয়ার কারণে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে তাছাড়া বন্দরের ব্যবস্থাপনা নানাবিধ হয়রানির কারণে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বেনাপোল কাস্টমসে নানা জটিলতার কারণে বেশ কিছু আমদানিকারক এই বন্দর দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। অধিক শুল্ককর আদায়যোগ্য পণ্যগুলো এ বন্দর দিয়ে কমে গেছে। মোটরপার্টস, ফেব্রিকস, আয়রন, স্টিল, আপেল ও মোটর গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানিকারকরা বেনাপোল দিয়ে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব পণ্য থেকে প্রায় ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে বলে জানা যায়। কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। গত ৪ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। তার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২৪০ কোটি টাকার রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে। বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্টের বিষয়ক সম্পাদক স্বত্বাধিকারী রাতুল এন্টারপ্রাইজের আব্দুল লতিফ তিনি বলেন, মূল কারণ হচ্ছে ব্যাংক এলসি না দেওয়ায় ডলার সংকট হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যিক কম হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, পেটটা সোলট বুকিংয়ের নামে বাড়তি টাকা পার গাড়ি থেকে আদায় করা হয়। আমদানিকারক আমিনুল ইসলাম আনু বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য ১১০ দশমিক ৪২ টাকা। এলসির সমুদয় টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করলেও ব্যাংক এলসি দিচ্ছে না। এলসি করতে গেলে পিআই অনুমোদনের জন্য ব্যাংকের ম্যানেজারকে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। গত সপ্তাহে এলসি করতে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ছিল ১১২ টাকা। চলতি সপ্তাহে তা বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছে। এসব অনিয়ম না মানলে এলসি হচ্ছে না। এজন্য আমরা বেশি প্রয়োজন ছাড়া এলসি করছি না। বাণিজ্যিক আইটেমের এলসি না হওয়ার কারণে আমদানি বাণিজ্য কম হচ্ছে। রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ডলার সংকট চলছে। ডলার সংকট দেখিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এলসি দিতে চাচ্ছে না। আর এলসি দিলেও ডলারের রেট অনেক বেশি। ডলার বাইরে থেকে কেনার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে তারা। এলসি না হওয়ার কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি অনেক কমে গেছে এরইমধ্যে।’ বেনাপোল কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘জেনেছি এলসি না হওয়ার কারণে ডলার সংকট কারণে আমদানি কম হচ্ছে। আগের তুলনায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্য অনেক কমে গেছে। তাছাড়া রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে মূলত ঘাটতি হয়েছে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায়। বিশেষ করে মোটরগাড়ি ও মোটরপার্টস থেকে ২০১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। আপেল আমদানিতে ২৪ কোটি ও ফেব্রিকস আমদানিতে ২১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। সর্বমোট ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে। আশা করছি আমদানি বাণিজ্য বাড়লে ঘাটতি রাজস্ব পূরণ হয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত