ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

টাঙ্গাইলে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু

টাঙ্গাইলে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু

প্রসূতি মীম আক্তার হাটতে হাটতে ঢুকলেন হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে। এর মাত্র ২০ মিনিট পরই মীম আক্তার ও তার নবজাতকের লাশ বের করে দেন চিকিৎসক। এ নিয়ে তুমুল হট্টগোলের মধ্যে সমানতালে চলছে আহাজারি। স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মা ও নবজাতক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল দুপুরে হাসপাতালের ১ নম্বর অপারেশন থিয়েটারে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর অপারেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. সালমা জাহান ও হাসপাতালের চলতি দায়িত্বে থাকা সিনিয়ার কনসালটেণ্ট ডা. প্রনব কর্মকার গাঢাকা দেন। জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সিঙ্গুরিয়া গ্রামের হানিফ আলীর মেয়ে প্রসূতি মীম আক্তার। তার স্বামী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মদনা গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে ঢাকায় একটি গার্মেণ্টস ফ্যাক্টরিতে পোষাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। প্রসব বেদনা উঠায় মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। গাইনী বিভাগের জুনিয়ার কনসালটেণ্ট ডা. সালমা জাহান তার অপারেশন করেন। অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার ২০ মিনিট পরই মা ও নবজাতক কন্যার মরদেহ বের করে দিয়ে সটকে পড়েন ওই চিকিৎসক। স্বজনরা অভিযোগ করেন, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনী বিভাগের জুনিয়ার কনসালটেন্ট ডা. সালমা জাহান তাদেরকে শহরের সোনিয়া নার্সিং হোমে প্রসূতি মীম আক্তারের অপারেশন করাতে বলেন। তারা হতদরিদ্র হওয়ায় এ প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় ওই ডাক্তার সিজারিয়ান অপারেশনের সময় অবহেলা করায় মা ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের আরও অভিযোগ, প্রসূতি মীম আক্তার হাটতে হাটতে অপারেশন থিয়েটারে যান। অথচ অপারেশন থিয়েটারে যাওয়ার ২০ মিনিটের মাথায় প্রসূতি মা ও নবজাতকের লাশ বের করে দেওয়া হয়। নিহতের খালা মাজেদা আক্তার জানান, প্রসূতি মীমের মৃত্যুর পর জোর করে হাসপাতালের দুজন নার্স-ওয়ার্ডবয় লাশের ছাড়পত্র কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মা ও নবজাত মেয়ের মরদেহ বের করে দেয়। এ সময় হাসপাতালের নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের সঙ্গে নিহতের স্বজনদের হাতাহাতি হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেণ্ট (গাইনী) ডা. সালমা জাহান মুঠোফোনে বলেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান ঢাকায় থাকায় তিনি গণমাধ্যমে কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে পারবেন না। এরপরই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের চলতি দায়িত্বে থাকা সিনিয়র কনসালটেণ্ট (কার্ডিওলজি) ডা. প্রনব কর্মকারের খোঁজ করলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তিনি অনেক আগেই কর্মস্থল থেকে বের হয়ে গেছেন। ডা. প্রনব কর্মকারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া জানান, জেনারেল হাসপাতালের বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাদিকুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রির্পোটের ভিত্তিতে তিনি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত