ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেশবপুরে বিলুপ্তির পথে জাতীয় শাপলা ফুল

কেশবপুরে বিলুপ্তির পথে জাতীয় শাপলা ফুল

যশোরের কেশবপুরে খাল-বিল থেকে হারাতে বসেছে জাতীয় শাপলা ফুল। এতে খাল-বিলের সৌন্দর্য বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার ব্রহ্মকাটি বিল, রামচন্দ্রপুর, লক্ষীনাথকাটি ও প্রতাপপুরসহ বেশ কয়েকটি বিল ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো আর শাপলা ফুল দেখা যায় না। স্থানীয়রা জানান, শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল একসময় গ্রামবাংলার খালে, বিলে, পুকুরের পানিতে, নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মাত। নিজেদের সৌন্দর্য মেলে ধরে ফুটে থাকত এ ফুল। কালের বিবর্তনে আর উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে কেশবপুরে আজ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে জাতীয় ফুল শাপলা। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, ফসলি জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, বিল থেকে শাপলা ফুল তুলে এনে বাজারে বিক্রি, মৎস্য ঘের করার ফলে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ, খাল দখল ও সংস্কারের অভাবে বর্ষাকালে আর তেমন পানি হয় না বলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে জাতীয় ফুল শাপলা। ফুলটি পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের। জানা গেছে, শাপলা সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভুক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। হাওর-বিল ও দিঘিতে এটি বেশি ফোটে। শাপলা ফুল রাতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফোটে। এরা দিনের বেলায় কিছুটা সঙ্কুচিত হয়। শাপলা আসলে ফুল প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এক ধরনের ফুল। যার কোনো রকম পরিচর্যা ছাড়াই বিলে খালে জন্ম নেয়। সাধারণত আবদ্ধ অগভীর জলাশয়, খাল-বিলে জন্মে থাকে ফুলটি। শাপলা ফুল কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যার মধ্যে সাদা ফুল বিশিষ্ট শাপলাটি এক সময় গ্রামবাংলায় অনেকেই সবজি হিসেবে ব্যবহার করতেন। বহু ঔষধি গুণও রয়েছে এই শাপলায়। হজমের সমস্যায় এই শাপলা ফুল ব্যবহার করা হয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এই উদ্ভিদ উপকারী। অতিরিক্ত পিপাসা নিবারক ও আমাশা রোধে ব্যবহার করা হয় এই উদ্ভিদ। সাধারণত ঔষধের জন্য এই উদ্ভিদের ফুল ও বীজ ব্যবহার করা হয়। এই উদ্ভিদের বীজ ভেজে খাওয়া হয়। শাপলা ফুলের গোড়ায় পানির নিচে একপ্রকার আলুর মতো কন্দ থাকে যা রান্না করে খাওয়া যায়। গ্রাম বাংলায় এই ফুল বিভিন্ন জলাশয়ে বর্ষাকালে অহরহ দেখা যেত। আজ তা বিলুপ্তির পথে। স্কুল শিক্ষক শাহীনুর রহমান বলেন, বর্তমান সভ্যতায় ছোঁয়ায় ফসলি জমি ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ, পুকুর খনন, জলাশয়ে কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে গেছে। যার কারণে শাপলা দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। একসময় বর্ষাকালে এই অঞ্চলের ফসলি মাঠে পানি জমত। আর ওই জমা পানিতে জন্মাত নানা প্রজাতির শাপলা। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না এ দেশের জাতীয় ফুলটি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত