যশোরে চাষ হচ্ছে ৬০০ প্রজাতির ঔষধি গাছ

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

প্রায় ৬০০ প্রজাতির ঔষধি গাছের চাষ হচ্ছে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি-ছাতিয়ানতলা গ্রামে। পাঁচ বছর আগে ঔষধি গাছের নার্সারি তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন এ গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য কবির হোসেন। বর্তমানে সেখানে ননী ফল, ইনসুলিন প্লান্ট, জিনসিং, লাল ও সাদা চন্দন, আগর, তীন, জাফরান, ঘৃতকুমারী, তুরুক চান্ডাল, বাই চান্ডাল, পাথরকুচি, নিম, অর্জুন, শতমূলসহ প্রায় ছয় শতাধিক বিভিন্ন প্রকার ঔষধি গাছ রয়েছে। এসব গাছের বাকল, ফল, পাতা ও রস খেলে বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে নিরাময় মেলে। তিনি এই নার্সারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিসহ বিভিন্ন জেলার বৃক্ষপ্রেমীদের কাছে অসংখ্য গাছের চারা সরবরাহ করেছেন। এছাড়া প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ক্রেতারা চারা গাছ এবং ঔষধি গাছের ফল কিনতে ভিড় করছেন ননী ফল নার্সারিতে।

কবির হোসেন জানান, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর ২০০৬ সালে আফ্রিকা থেকে পাঁচটি ননী ফল, একটি করসল, দুটি জিনসিং ও চারটি ইনসুলিন গাছ সংগ্রহ করে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের নারকেলবাড়িতে রোপণ করেন। এরপর ভালো ফলন পেয়ে ২০১৮ সালে করসল, ননী ফল, ইনসুলিনসহ নানা প্রজাতির এক হাজার ঔষধি গাছ নিয়ে যশোরের ছাতিয়ানতলায় নিজের প্রায় ৪ বিঘা জমিতে নার্সারি করেন। ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুর উপজেলা থেকে ইনসুলিন গাছের ফল কিনতে আসেন আল-আমিন শেখ। তিনি বলেন, আমার বাবার ডায়াবেটিসের সমস্যা। এক ডাক্তারের মাধ্যমে এই ইনসুলিন গাছ সম্পর্কে জানতে পারি। এরপর খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যশোরে এর চাষ হয়। এজন্য ইনসুলিন ফল কিনতে আসলাম। ঢাকার সাভার থেকে ঔষধি গাছের চারা কিনতে আসা মফিজুর রহমান বলেন, বাড়িতে কিছু জায়গা আছে। চাকরি থেকে অবসরে যাবার পর গাছ লাগানো একটা নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য ভাবছি ঔষধি গাছের চারা লাগাব। কারণ এগুলো দুষ্পাপ্য।

একসঙ্গে ১২টি চারা নিয়েছি। বড় দুর্লভ প্রজাতির ঔষধি গাছের নার্সারি এটি। ননী ফল নার্সারিতে বিলুপ্ত প্রজাতির বিভিন্ন চারা রয়েছে। কবির হোসেনের কাছ থেকে অনেক মানুষ গাছ সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নার্সারি গড়ে তুলেছে। তারাও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এ নার্সারিতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৮০ জন বেকার মানুষের। এরমধ্যে একই গ্রামের পাঁচজন বিধবা নারীও সেখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

শিহাব নামে ওই নার্সারির এক কর্মচারী বলেন, এই নার্সারির মাধ্যমে যেমন মানুষ উপকৃত হচ্ছে, তেমনি আমরাও উপকৃত হচ্ছি। আমার সংসার চলছে এ নার্সারির ওপর। আমার মতো করে আরো অনেক বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুঞ্জুরুল হক বলেন, ঔষধি গাছ চাষের জন্য আমরা সেভাবে কোনো পদক্ষেপ নেইনি। যশোর অনেক আগে থেকে কৃষিতে বিখ্যাত। তবে ইদানীং কৃষক ইউটিউব দেখে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চারা বীজ সংগ্রহ করে ঔষধি গাছের চাষ করছে। আমাদের যশোরেও অনেকে করছে। আমরা এসব চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছি।