ভালো নেই মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

টানা অবরোধ-হরতালের কারণে দিন ভালো যাচ্ছে না চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীদের। বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফল বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। কিন্তু ধাপে ধাপে চলমান হরতাল-অবরোধের কারণে চলতি মাসের শুরু থেকে তাদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। এতে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাদের। মিরসরাই সদরের মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী জামশেদ আলম বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ কি পেট মানে? সারাদিন মৌসুমি ফল বিক্রি করে কিছু টাকা পেতাম। এতে সুন্দর করে পরিবার নিয়ে চলছিলাম। এখন তাও সম্ভব হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘আগে প্রতি সপ্তাহে দু-একবার ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চাকরিজীবীরা বাড়িতে আসতেন। তারা পরিবারের জন্য সাধ্যের মধ্যে মৌসুমি ফল কিনে নিয়ে যেতেন। তবে হরতাল-অবরোধের কারণে তারা আগের মতো বাড়ি আসছেন না। তারা না আসায় আমাদের বিক্রিও কমে গেছে। বিক্রি না থাকায় স্থানীয় বাগান থেকে কিনে আনা মৌসুমি ফলগুলোতে পচন ধরেছে।’ একই সুরে কথা বললেন আরেক ফল ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া। তিনি বলেন, ‘মৌসুমি ফল বিক্রি করে কোনোরকম ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার চালাই। বাজারে জিনিসপত্রের দামও অনেক বেশি। অথচ হরতাল-অবরোধের কারণে বেচাকেনা নেই। ফল পচে যাচ্ছে, তারপরও বিক্রি করতে পারছি না।’ রুবেল মিয়া বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে ৪০ কেজির বেশি ফল পচে গেছে। অনেক সময় কেনা দামের চেয়েও কম দামে ফল বিক্রি করতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চার সন্তানের পরিবার নিয়ে কই যাবো ভেবে কূল পাচ্ছি না।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ছোট-বড় বাজারগুলোতে প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী রয়েছেন। তারা স্থানীয় পাহাড়ি বাগান ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পেঁপে, পেয়ারা, আমলকি, লেবু, ড্রাগন, কলাসহ বিভিন্ন জাতের ফল এনে উপজেলার বাজারগুলোতে বিক্রি করেন। তবে লাগাতার হরতাল-অবরোধের কারণে তাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। আবুতোরাব বাজারের ফল ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বেচাকেনা নেই বললেই চলে। এমনিতে জিনিসপত্রের অনেক দাম। তাই মানুষ আগের মতো ফল কেনে না। তার ওপর অবরোধের কারণে অবস্থা আরও খারাপ।’ ব্যাংক কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। প্রতি বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে বাড়িতে যেতেন। শুক্র-শনি বন্ধের দিনে পরিবারের সঙ্গে কাটাতেন। যাওয়ার সময় পরিবারের জন্য কিনতেন বিভিন্ন ধরনের ফলমূল। মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘এখন বাড়িতে কম যাওয়া হয়। হরতার আতঙ্কে গত তিন সপ্তাহ বাড়িতে যাই না। এজন্য বাজার থেকে দেশীয় ফলমূলও কেনা হয় না।’ উপজেলার বারইয়ারহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ বলেন, বারইয়ারহাট বাজারে প্রায় অর্ধশত মৌসুমি ফল ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন। এ ব্যবসার আয় দিয়ে তাদের পরিবার চলে। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে তাদের বেচাকেনা অনেক কমে গেছে। কষ্টে রয়েছেন এসব ব্যবসায়ীরা।