ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিলে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার

বিলে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার

পাবনার সাঁথিয়ায় অসাধু প্রভাবশালীরা বিলে মাটির বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করায় পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে উপজেলার ধুলাউড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় শত শত কৃষকের পাকা আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় কাটতে হচ্ছে। বিলগুলোতে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতায় নষ্ট হচ্ছে খেতের পাকা ধান, ব্যহত হচ্ছে পেঁয়াজসহ রবি শস্যের আবাদ। কৃষকেদের অভিযোগ, এ মাঠে পেঁয়াজের আবাদ করে প্রতি বিঘা জমিতে ৭০ থেকে ৮০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হতো, সেখানে আজ বেশ কয়েকটা বছর অসাধু লোকজন মাছ শিকারের নামে বিলে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে আবাদী জমিকে অনাবাদী করে রেখেছে। ফলে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের বছরের পর বছর। এ লোকসান থেকে পরিত্রাণ পেতে বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়ে এলাকার কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কৃষি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিন মাঠ ঘুরে জানা গেছে, পাবনার পেঁয়াজ খ্যাত সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি ইউনিয়নের বাউশগাড়ী, রুপসি, বারোয়ানী, লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ছোট দোবিলা, বড় দোবিলা ও মাদনাইসহ তিনটি বিল রয়েছে। এসব বিলের পানি একটি জোলা (ছোট ক্যানাল) দিয়ে বের হয়ে যেত নদীতে। কিন্তু গত ৪ থেকে ৫ বছর এলাকার কতিপয় অসাধু ব্যক্তিরা নাম মাত্র লিজ নিয়ে জোর করে বিলের পানি প্রবাহের রাস্তায় মাটির বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে ফসলের মাঠে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এর ফলে পানির মধ্যে থেকেই কৃষককে আমন ধান কাটতে হচ্ছে। এখনও অনেকের ধান জমিতেই পড়ে রয়েছে কৃষি শ্রমিকের অভাবে। এতে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে ধান, অন্যদিকে পানির মধ্যে ধান কাটতে মুজুরি দিতে হচ্ছেও বেশি। গুণতে হচ্ছে লোকসান। কৃষকরা জানান, কয়েকদিনের মধ্যে আগাম জাতের পেঁয়াজের চারা বপন শুরু হবে, অথচ এখন পর্যন্ত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চিন্তিত তারা। কারণ তাদের শত শত বিঘা জমি পেঁয়াজের ও রবি শস্যের আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কৃষক হুমায়ুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেখানে এক ইঞ্চি জায়গা খালি না রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন, সেখানে বাঁধ দেয়ার ফলে শত শত বিঘা জমি অবাদী পড়ে থাকে জলাবদ্ধতায়।

এ বিষয়ে ধুলাউড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জরিফ আহমেদ বলেন, কেউ যদি বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে সেক্ষেত্রে কৃষকের পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্যান্য রবি শস্য আবাদ ব্যাহত হয়। বিষয়টা আমাকে কেউ জানায়নি। তবে এ রকম কেউ করে থাকলে অবশ্যই বাঁধ অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার গোস্বামী অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা খুব দ্রুত সরজমিন মাঠে ভিজিট করে কি করণীয় করা যায়, সেই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন যারা আছেন, তাদের সহায়তা নিয়ে বাঁধ অপসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত