ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রিপেইড মিটার গ্রাহকের এখন গলার ফাঁস

প্রিপেইড মিটার গ্রাহকের এখন গলার ফাঁস

নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করতে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) বা পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহকের ঘরে স্থাপিত প্রি-পেইড মিটার এখন কুষ্টিয়ার হাজারো গ্রাহকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রয়োজনীয় ব্যালেন্স রিচার্জ এবং লোড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির কর সংযোজন-সংক্রান্ত জটিলতায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সংশ্লিষ্ট বিদ্যু অফিসে ধরনা দিতে হচ্ছে এসব প্রি-পেইড মিটারধারী হাজারো গ্রাহককে। অভিযোগ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওজোপাডিকো লি. ডিভিশন-১ কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরের দাবি বিদ্যুৎ সেবাদানের বিনিময়ে উল্লেখিত সেবা কর আগে থেকেই ধার্য ছিল। এতদিন এই বিধি পালনে কর্তৃপক্ষ নজর না দিলেও এখন এই বিদ্যুৎ বিধি পালনে কড়াকড়ি আরোপের ফলে বিষয়টি গ্রাহকদের কাছে নতুন মনে হচ্ছে। মিটারের লোড বাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছে ওজোপাডিকো কুষ্টিয়া অফিস। কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়া এলাকার আবাসিক গ্রাহক নাজমুল হক বলেন, ‘গত ১৩ নভেম্বর আমার প্রি-পেইড মিটার রিচার্জ করতে গেলে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকানো যাচ্ছিল না। এ সমস্যার সমাধানে আমি ছুটে যাই বিদ্যুৎ অফিসে, সেখানে বিদ্যুৎ কর্মীরা আমার সমস্যার কথা শুনে নতুন করে আরো ২০ ডিজিট মিটারে প্রবেশ করিয়ে আমাকে মিটারে টাকা রিচার্জ করতে বলেন। ওদের কথা মতো নতুন করে ইস্যুকৃত ওই ২০ ডিজিটের নম্বর ঢোকানোর পর থেকেই হঠাৎ হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পরে আবারও যখন বিদ্যুৎ অফিসকে সমস্যার কথা জানাই তখন তারা বলেছে, আপনি লোড ক্যাপাসিটির চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন বলেই এই সমস্যা হচ্ছে; এর সমাধান করতে চাইলে আরো ৪০৩ টাকা জমা দিয়ে ব্যবহার সক্ষমতা বা লোড ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। এই ব্যবহার বৃদ্ধির শর্ত হলো প্রতি কিলো ওয়াট বিদ্যুতের জন্য প্রতি মাসে বাড়তি আরো ৩৫ টাকা হিসেবে সেবা কর দিতে হবে।’ আমি এখন ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না যে আমার কি করা উচিত? বিদ্যুৎ বিভাগ দেখছি দিনকে দিন নানা খাত দেখিয়ে প্রি-পেইড গ্রাহকের পকেট থেকে টাকা খসিয়ে নিচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ ওজোপাডিকো লি. কুষ্টিয়া সূত্রে জানা যায় যে, কুষ্টিয়াতে ওজোপাডিকোর মোট গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৬৯ হাজার। এসব গ্রাহকদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২৫ হাজার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকের ঘরে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় এসব প্রি- পেইড মিটারে সংযোজিত সবগুলি অ্যাপস সক্রিয় না থাকায় ওই সময় গ্রাহকদের ডিমান্ড চার্জের বিষয়টি ওঠেনি। সম্প্রতি এসব প্রি-পেইড মিটারের সবগুলি অ্যাপস কেন্দ্রীয়ভাবে আপগ্রেডেশন করার ফলে অ্যাপসগুলো সক্রিয় হয়েছে এবং এর ব্যবহার বিধিগুলো গ্রাহক পর্যায়ে ওঠে এসেছে। ওজোপাডিকো কুষ্টিয়া ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ওজোপাডিকো লি. গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করতে সব রকম পরিকল্পনার বাস্তবায়নে কাজ করছে। গ্রাহকের ভোগান্তি নয় বরং গ্রাহকবান্ধব বিদ্যুৎসেবায় সদা তৎপর। এই সেবাকে আরো গতিশীল করতেই সম্প্রতি বিদ্যুৎ ব্যবহারবিধি প্রতি পালনে প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান করেছে। আরো সহজ করে বললে দাঁড়ায়- এতদিন গ্রাহক তার নিজের ইচ্ছে মতো বিদ্যুৎ ব্যবহারে কোনো বিধিনিষেধ না মানলেও এই প্রি-পেইড মিটারে বিদ্যুৎ ব্যবহারে গ্রাহককে অবশ্যই পরিমিতি নিয়মের মধ্যে আসতে হবে। তবে সম্প্রতি প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকরা কিছু সমস্যা নিয়ে আসছেন। সেগুলো সমাধানে আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত