ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন

টাঙ্গাইলে অসময়ে নিউ ধলেশ্বরী নদীর বাঁধে ধস

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের নিউ ধলেশ্বরী নদীর কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা উত্তরপাড়া ও বাজারের উত্তর পাশের তীররক্ষা বাঁধে অসময়ে ধস দেখা দিয়েছে। শুকনো মৌসুমে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এরই মধ্যে ধসে নদীর বাম তীরের ৩০০ মিটারের বেশি এলাকায় পাউবোর তীররক্ষা বাঁধের সিমেন্টের ব্লকসহ এলেঙ্গা বাজারের কসাইখানা ধসে নদীতে ঠাই নিয়েছে। এ ধস অব্যাহত থাকলে আগামী বর্ষায় নদীর উপর এলজিইডি নির্মিত ব্রিজ, স্থানীয় ঘরবাড়ি ও বাজারের পশ্চিমাংশ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নিউ ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরে ভাঙনরোধে ২০১৫-২০১৬ সালে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাজার ও এলেঙ্গা উত্তরপাড়ার কিছু অংশে সিমেন্টের ব্লক দিয়ে তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। ফলে ওই এলাকার মানুষ নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পায়। গত ৩ বছর ধরে শুকনো মৌসুমে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় বালু ব্যবসায়ীরা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করছে। গত বছর শুকনো মৌসুমে এলেঙ্গা বাজারের পশ্চিমে এলজিইডি নির্মিত ব্রিজের উত্তর-দক্ষিণে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে দিন-রাত কোটি কোটি সিএফটি বালু উত্তোলন করে। ওই বালু উত্তোলন নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বালু ব্যবসায়ীদের একাধিকবার ঝগড়াও হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতা থাকায় বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকে। ওই বালু উত্তোলনের কারণে এখন নদীতীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। সরেজমিন স্থানীয়রা জানান, অসময়ে নদীতীর রক্ষা বাঁধে ধসের কারণে এরই মধ্যে এলেঙ্গা বাজারের কসাইখানা পুরোটা এবং স্থানীয় আশরাফ বেপারীর দোকানের পশ্চিমের অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ওই এলাকার সায়েম উদ্দিন, ছবুর তালুকদার, অতুল চন্দ্র দাস, সমেশ তালুকদার, মৃত কাশেম তালুকদারের বাড়ির পশ্চিমাংশে ধস দেখা দিয়েছে। এলেঙ্গা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানায়, গত বছর ব্যাপকহারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীতে পানি না থাকলেও তীররক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ফলে এলেঙ্গা বাজারের ব্রিজ, বাজারের পশ্চিমাংশের দোকানপাট, এলেঙ্গা উত্তর পাড়ার বাড়িঘর ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী আশরাফ বেপারী জানান, অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে তার দোকানের পশ্চিমাংশ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনরোধে তিনি নিজ উদ্যোগে প্রায় ১ লাখ টাকার বালুর বস্তা ফেলেও কোনো সুফল পাননি। এবার শুকনো মৌসুমে কেউ যেন বালু উত্তোলন না করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। এলেঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেন জানান, নদীতীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের পর এ এলাকায় ভাঙন বন্ধ হয়েছিল।