ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্যের মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ

অন্যের মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ

কাঠের পিঁড়িতে বসে আছেন কয়েকজন। প্রত্যেকের পায়ের ওপর বঁটি রাখা। এই মাছ কাটতেই দিন শুরু তাদের, মাছ কাটতেই দিন শেষ। এতেই চলে সংসার। দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনী বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আসে এখানে। উপজেলাবাসী ছোট-বড় যে কোনো অনুষ্ঠানের জন্য মাছ বাজার থেকে কিনে নিয়ে যায়। পরে মাছ কাটতে তাদের কাছে ছুটে যান। দিনে মাছ কেটে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার খরচসহ সন্তানদের পড়াশোনা করান স্বাচ্ছন্দ্যে। তাদের কেউ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ পেশায় আছেন। এমনও আছেন অনেকের দাদারাও এ পেশায় ছিলেন। বাজারে আসা বেশিরভাগ মানুষই মাছ কিনে তাদের কাটতে দেন। বিনিময়ে কিছু টাকা নেন তারা। প্রতিদিন এভাবে মাছ কেটে প্রত্যেকে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করেন। যাতে প্রত্যেকের আয় দাঁড়ায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকার মতো। গতকাল দুপুরে উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজারের মাছ কাটা পেশায় জড়িতের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাছ কাটার পেশায় জড়িত পাঁচ দোকানে ১০-১২ জন। বড় অনুষ্ঠানের জন্য কেউ মাছ কিনলে ওই মাছ চাহিদা অনুযায়ী তারা কেটে টুকরো করে দেন। প্রতি কেজি মাছ কাটার জন্য নেওয়া হয় ২০ টাকা কিংবা এর কম। মাছ কাটার কাজে জড়িত বিকাশ কান্তি বলেন, মাছ কেটে প্রতিদিন এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। দিনে মাছ কেটে যা আয় হয়, তা দিয়ে সন্তানদের পড়াশোনাসহ গোটা মাস সংসার চলে স্বাচ্ছন্দ্যে। মাছ কাটার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা জানান, ছোট, মাঝারি ও বড় তিন ধরনের মাছই কাটেন তারা। তবে মাছভেদে কাটার মূল্য নির্ধারণ হয়ে থাকে। ছোট মাছ হলে একটু বেশিই নেন। অন্যান্য বড় ও মাঝারি মাছ প্রতি কেজি ১০ এবং দুই কেজিতে ২০ টাকা নিয়ে থাকেন। এভাবে তাদের দৈনিক আয় হয় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। মাছ কাটতে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘একসময়ে তো ঘরে বড় কোনো মাছ কিনে নিয়ে গেলে সেটা ঘরের নারীরা একসঙ্গে বসে কেটে রান্না করতেন। কিন্তু সময় এখন পরিবর্তন হয়েছে। এখন মানুষ আগের থেকে অনেক শৌখিন। বাড়িতে নিয়ে মাছ কাটতে চায় না। তাই মাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের চাহিদা বেড়েছে।’ আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, বাজারে আধুনিক টিনশেডের মধ্যে মাছ কাটা পেশায় জড়িতদের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। যারা মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের যদি কোনো সমস্যা হয় জানানোর জন্যও বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত