ঝিনাইদহে ফুলের ব্যবসায় ধস

দিশাহারা ফুলচাষি

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক হরতাল-অবরোধ। পরিবহণ ব্যবসায় যেমন নেমেছে ধস তেমনি ফুলনগরীখ্যাত এ জেলায় ফুল ব্যবসা মুখথুবড়ে পড়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে জেলার ফুল ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তরা।

যেখানে ক’দিন আগে গাঁদা ফুলের প্রতি ঝোপা বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। হরতাল আর অবরোধে একদম দাম পাচ্ছেন না ফুল ব্যবসায়ীরা। ফুল চাষ ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এমনটা জানালেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফুলচাষি শাহাদাত হোসেন। জানা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যশোরের গদখালীর পর বেশি ফুলের চাষ হয় ঝিনাইদহে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না বাজার ও বালিয়াডাঙ্গা বাজারে প্রতিদিন বসে ফুলের হাট। দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুলের চাহিদা মেটাচ্ছে এই অঞ্চলের ফুলচাষীরা। ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগেও ফুলের দাম ভালো ছিল।

কিন্তু হরতাল আর অবরোধে ফুলের বাজারে ধস নেমেছে। কয়েকদিন আগে গাঁদা ফুল প্রতি ঝোপা ১৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। গোলাপ প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা। জারবেরা বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা আর এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এ বছর ২৫৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ হয়েছে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে গাঁদা ফুল। শরিফুল ইসলাম নামে আর এক ফুল চাষি জানান, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে গাঁদা গোলাপসহ বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করেছেন। মহামারি করোনার সময় ফুলের ব্যবসায় ধস নেমেছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু হরতাল অবরোধের কারণে আবার ফুলের ব্যবসায়ী ধ্বস নেমেছে। হাফিজুর রহমান নামে এক ফুল ব্যবসায়ী জানায়, হরতাল-অবরোধের আগে ফুলের ভালো দাম পেয়েছে চাষিরা। কিন্তু এখন একদমই দাম পাচ্ছে না।

পরিবহণ সমস্যায় ফুল কেনা যাচ্ছে না। ফুল সঠিক সময়ে না পৌঁছাতে পারলে লোকসান হয়। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, এখন ফুলের মৌসুম। দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে ফুল চাষে যশোরের গদখালীর পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে ঝিনাইদহ। খুলনার ১০ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাঁদা ফুল চাষ হয় ঝিনাইদহে। হরতাল-অবরোধে ফুল চাষি ও ব্যবসায়ীদের বেশ লোকসান পোহাতে হচ্ছে। চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে দিনের পর দিন। ফুল পচনশীল হওয়ায় বিক্রির অন্য কোন উপায় না থাকায় এ অবস্থা।