ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নবান্ন উৎসবে মেতেছে ঘিওরের কৃষক

নবান্ন উৎসবে মেতেছে ঘিওরের কৃষক

নবান্ন হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ। নতুন ধান ঘরে আসার পর শুরু হয় চালের তৈরি পিঠাপুলি খাওয়ার নবান্ন উৎসব। নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি পিঠা, পায়েস, ক্ষীরসহ নানা রকম খাবারে মুখরিত হয়ে ওঠে বাঙালির প্রতিটি ঘর। নতুন ধানের পিঠাণ্ডপায়েসের ঘ্রাণে ভরে ওঠে চারপাশ। এরই মধ্যে মানিকগঞ্জের ঘিওরে মাঠে মাঠে সোনালি ধান কাটার ধুম পড়েছে। নবান্ন উৎসবে মেতেছে কৃষক। কৃষানিরা ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত।

কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন, জমিতে শস্যবিন্যাস সজ্জিতকরণ ও নতুন জাতের ধান আবাদের ফলে শস্যের নিবিড়তা ও ফলন বেড়েছে। সরেজমিন উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কোশুন্ডা গ্রামে দেখা যায়, মাঠের এক কোণায় ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন কয়েকজন কিষান-কিষানি। পাশেই ফসলের খেত। নবান্নের আনন্দে আমন ও বোরো ধান কাটার ধুম লেগেছে। কৃষকরা জানান, সাধারণত হেমন্তের এই সময় তাদের আমন ধান ঘরে তোলার কথা। কিন্তু চলতি বছর বর্ষার পানি স্বল্প পরিমাণে আসে, যা খুবই ক্ষণস্থায়ী থাকে। অনেক এলাকার ফসলের মাঠে তা প্রবেশও করেনি। ফলে স্থানীয় কৃষকরা অধিক ফলনের হিসাব-নিকাশে এবার আমনের চেয়ে একটু বেশিই রোপণ করেছিলেন ইরি বোরো। উপজেলার বানিয়াজুরী, বালিয়াখোড়া, সিংজুরী, নালী, বড়টিয়া, পয়লা, ঘিওর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মাঠে চলছে ধান কাটাই ও মাড়াই। বাড়ির উঠানে নতুন ধানের স্তূপ। কোশুন্ডা গ্রামের কৃষক মজিদ আলী বলেন, এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে আমনের আবাদ করেছি। বর্ষার পানি বেশি দিন খেতে না থাকায় ফলন তেমন ভালো হয়নি।

এছাড়া শ্রমিকের দাম বেশি, তাই ধান কাটাই-মাড়াই কিছুটা ধীরে হচ্ছে। উপজেলার প্রাকৃতিক কৃষিকেন্দ্রের পরিচালক দেলোয়ার জাহান বলেন, সমৃদ্ধির ঋতু হেমন্ত যখন আসে তখন ফসল তোলায় বঙ্গজননী তার দ্বার খুলে দেয়। তবে যারা এত পরিশ্রম করেন, সেই কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য পেলে সার্থক হবে বাংলার নবান্ন। বালিয়াখোড়া ইউপি সদস্য মো. রতন মিয়া বলেন, নতুন ধান নিয়ে কৃষকের যেমন ব্যস্ততা, তেমনি আনন্দও। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি। অনেকের বাড়িতে চলছে পিঠাণ্ডপায়েস খাবারের প্রস্তুতি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় এবার উফশী ও স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন এবং ৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চলতি বছর ধানের বোরো ৮৮/৮৯/৯২/১০০ নতুন জাতের আবাদ করা হয়েছে। শস্যবিন্যাস সজ্জিতকরণের ফলে বর্তমানে শস্যের নিবিড়তা ও ফলন বেড়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত