হাজীগঞ্জে ঘূর্ণিঝড়ে ৪০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র পরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ৪০ হেক্টর জমির রবি মৌসুমের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে ঋণ করে ফসল আবাদ করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলো আগামী বোরো মৌসুমের আগ পর্যন্ত পতিত পড়ে থাকবে। কৃষি বিভাগ বলছে- জলাবদ্ধতার কারণ নির্ধারণ করে ওইসব এলাকায় গণসচেতনতা তৈরি করা হবে। গত কয়েকদিন উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের মাড়কি উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া, পৌর এলাকার বলাখাল গ্রাম ও সদর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, শীতকালীন আগাম সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসলগুলো জলাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে। অনেক কৃষক তাদের জমির সর্বশেষ ফসল রক্ষায় জমি থেকে সেচের মাধ্যমে পানি অপসারণ করছেন। বাকি আবাদি জমিগুলোর ফলগাছ ধীরে ধীরে মরে নুয়ে পড়ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যে জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার আগাম শীতকালীন সবজির মধ্যে মিষ্টি কুমড়া ও লাউ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৫ হেক্টর জমি। এছাড়াও ১৫ হেক্টর জমির সরিষা, আলু, মরিচ, খিরা, শসা, টমেটো, ফুলকপি, রসুন ও পেঁয়াজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনার আওতায় আনার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপজেলা থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকা। মাড়কী উত্তরপাড়ার কৃষক আবুল বাশার জানান, তিনি এ বছর তিন একর জমিতে আগাম শীতকালীন শাকসবজির আবাদ করেছেন। জলাবদ্ধতায় তার পুরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে তিনি এখন পথে বসার অবস্থা। এ কৃষক বিভিন্ন সমিতি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ করেছেন। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর চিন্তায় অসুস্থ হয়ে তার পিতা আব্দুল হালিম মারা গেছেন। ওই এলাকার কৃষক মোস্তফার সরিষা, কবির মিয়াজী, মো. জসিম গাজী ও রফিক দত্ত জানান, তাদের নিজেদের জমির ফসল যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমনি মাড়কী উত্তর ও পশ্চিমপাড়ার প্রায় দুই শতাধিক কৃষকের রবি মৌসুম ক্ষতিগ্রস্ত। বলাখলাল গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন জানান, ৫ একর জমিতে লাউ, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, খিরা ও শসাচাষ করেছিলাম। বৃষ্টির পানিতে সবগুলো ফসলে পচন ধরেছে। এখন কীভাবে চলবে, সংসার আর কীভাবে কিস্তি পরিশোধ করব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, সরকারি খাল ভরাট বা মাছ চাষ করে জলাবদ্ধতা তৈরি করে বাড়িঘর নির্মাণ করার কোনো বিধান নেই। এরই মধ্যে কিছু বাঁধ ভেঙে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ আসলে কৃষি বিভাগ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ব্যবস্থা নিব। তবে এক্ষেত্রে জন সচেতনতা তৈরি করা সবচেয়ে বেশি জরুরি বলে আমি মনে করি। আর বাঁধ দেয়া বা বাড়ি তৈরি করার আগে অভিযোগ দিতে হবে। বাড়ি তৈরি হয়ে গেলে অভিযোগ দেয়াটা কতটা যৌক্তিক। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আমরা প্রণোদনার আওতায় আনব।