মাধবপুরে ৫টি চা বাগানে বেড়েছে উৎপাদন ব্যয়

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হীরেশ ভট্টাচার্য্য হিরো, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাগান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ হতাশার মধ্যে পড়েছেন। করোনাকালীন সময়ের পর থেকে গত ৪ বছর ধরে লোকসান টানতে হচ্ছে বাগানগুলোকে। দিনে দিনে লোকসানের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। গত ৪ বছরে শ্রমিকের মজুরি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, আবাসন খরচ ও ওষুধসহ বিভিন্ন উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী চায়ের চাহিদা ও বাজার দর বৃদ্ধি পায়নি। এ অবস্থায় ৫টি চা বাগানের ব্যাংক দেনার পরিমাণ বেড়ে গেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখন ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগান লোকসানের মধ্যে পড়ে যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগানের মধ্যে তেলিয়াপাড়া ও জগদীশপুর ৫১ শতাংশ মালিকা নিয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানি ১২টি চা বাগানের মধ্যে এ দুটি চা বাগানও পরিচালনা করছেন। সুরমা, নোয়াপাড়া ও বৈকণ্ঠপুর চা বাগান ব্যক্তি মালিকানাধীন। নোয়াপাড়া চা বাগানের ডেপুটি ম্যানেজার সোহাগ মাহামুদ বলেন, ব্রিটিশ ফিনলে কোম্পানি থেকে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুর্শেদ খান বাগানটি ক্রয় করে পরিচালনা করে আসছেন। বাগানে কারখানা বর্ধিতকরণসহ নতুন বাগান সৃজন করে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চা বাগানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে খরার কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। করোনা মহামারির পর থেকে নোয়াপাড়া চা বাগানে উৎপাদিত চায়ের ভালো বাজার না পাওয়ায় লোকসান দিতে হচ্ছে। ২০২২ সালে চা শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে টানা ১৮ দিন বাগান বন্ধের কারণে ওই অর্থ বছরে লোকসানের পরিমাণ আরো বেড়েছে। তাদের মতে ভারত থেকে চোরাই পথে নিম্নমানের চা পাতা বাংলাদেশে প্রবেশের কারণে দেশের বাজারে চায়ের বাজার দর দিন দিন কমছে। বৈকণ্ঠপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপনা সামসুল ইসলাম জানান, বৈকন্ঠপুর চা বাগানটি একটি ছোট বাগান শ্রমিক সংখ্যা ৪০০-এর মতো। আমানত শাহ গ্রুপ ৫ থেকে ৬ বছর আগে বাগানটির মালিকানা ক্রয় করে বাগানে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই বাগানে লাভের মুখ দেখেনি। বছর বছর লোকসানের বোঝা টানতে টানতে এক সময় বাগানটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে সব মিলে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। কমেছে চায়ের উৎপাদন ও বাজার দর। একারণে গত ৮ থেকে ১০ ধরে লাভের মুখ দেখতে পারছে না বাগান কর্তৃপক্ষ। সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার জানান, করোনাকালীন সময়ে সারা দেশে লকডাউন থাকার কারণে দেশের অভ্যন্তরে ভোক্তা পর্যায়ে চায়ের চাহিদা কমে যাওয়ায় নিলাম বাজারে চায়ের দাম ছিল খুবই কম।