ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ

দেশীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ

লোকসংগীত, যাত্রাপালা, নাট্য ও পালাগান ছিল বাংলার ঐতিহ্য। এসব অনুষ্ঠানকে মনোমগ্ধকর করে তুলতে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র হারমোনিয়াম, তবলা, ঢোল, ঢুকঢুকি, বাঁশি ও একতারা-দোতারার মতো দেশীয় বাদ্যযন্ত্রগুলো শোভা পেত সবখানে। কিন্তু আধুনিক ও পাশ্চাত্যসংগীত আর ইলেকট্রনিকের বাদ্যযন্ত্রের প্রভাবে দেশীয় এসব বাদ্যযন্ত্র ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসলেও হার মানতে নারাজ উজ্জ্বল সিংহ।

চট্টগ্রামের আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের বন্দর সেন্টারে ‘নিলয় মিউজিক্যাল হাউস’ নামে দোকান বসিয়ে ২৬ বছর ধরে এসব দেশীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরির কাজ করছে উজ্জ্বল সিংহ। উজ্জ্বল সিংহের দোকানে চারজন কারিগর সকাল থেকে দিনরাত কাজ করে। তারা হারমোনিয়াম, তবলা, ঢোল তৈরি করছেন। জানা যায়, ১০ থেকে ১৫ বছর আগের হারমোনিয়াম ও তবলার বিক্রি ছিল বেশি। তখন প্রতিদিনই কাজের অর্ডার থাকত। অর্ডার দিয়ে বাদ্যযন্ত্র কিনতেন ক্রেতারা। কিন্তু বর্তমান যুগে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের অধিকাংশই মুখ থুবড়ে পড়েছে ইলেকট্রনিক গিটার, কিবোর্ড, পিয়ানো, ড্রামসেট, ভায়োলিনের মতো ভিনদেশি বাদ্যযন্ত্রের কাছে। যার ফলে এই শিল্প অনেক কমে গেছে। তাই জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেক কারিগর বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। সংগীতের সংকটাপন্ন সময়েও উজ্জ্বল সিংহ দোকানে চার কারিগর টিটু দে, উজ্জ্বল দে, এরশাদ ও হোসেনকে নিয়ে নিলয় মিউজিক্যাল হাউস নামের একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে এই শিল্পকে ধরে রাখার চেষ্টা। উজ্জ্বলের দোকানে হারমোনিয়াম ছাড়াও বাঁশি, একতারা, তবলা, ঢোল, জিসি, ঢোমলো, ঢুকঢুকি তৈরি করা হয়। একটি হারমোনিয়াম তৈরিতে সময় লাগে একজন কারিগরের এক সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রতিটি হারমোনিয়াম তৈরিতে খরচ পড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা আর বিক্রি হয় সাড়ে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বাঁশি ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, একতারা ২৫০ থেকে ১৫০০ টাকা, ঢোল ২৫০০ থেকে ৮ হাজার, তবলা ৫৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আনোয়ারার সাংস্কৃতিক কর্মীরা উৎপল সেন বলেন, যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার আজ বিলীনের পথে। দেশীয় বাদ্যযন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, দেশীয় বাদ্যযন্ত্র আমাদের ঐতিহ্য, উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখনো দেশীয় বাদ্যযন্ত্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকি। যারা এ শিল্পে কাজ করছে তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত