ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় বাঁশপণ্যের ঐতিহ্যবাহী হাট

নওগাঁয় বাঁশপণ্যের ঐতিহ্যবাহী হাট

এখনো গ্রামীণ জীবনে বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের ব্যবহার করতে দেখা যায়। যদিও প্লাস্টিক ও মেলামাইনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে এই শিল্প। গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য। এক সময় গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেত-বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করত। জানা গেছে, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আহসানগঞ্জ হাটে বসে বাঁশ ও বেত পণ্যের বাজার। সেখানে পাওয়া যায় বাঁশের তৈরি সব কিছু। প্লাস্টিকের আধিপত্যকে হার মানিয়ে বাজারগুলোতে এখনো টিকে আছে এই শিল্প। এই হাটে খৈচালা, কুলা, ডালা, টোপা, ধামা, খোল, চাটাই, খালুই, টোনা, পাল্লা, মোড়া, বুক সেল্ফ কদাচিৎসহ অন্তত ৪০টির বেশি পণ্য পাওয়া যায় এখানে। এই হাটে নওগাঁ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে ক্রেতারা আসেন কেনা বেচা করতে। টেকসই আর কম দামের কারণে গ্রামের মানুষের কাছে এখনো জনপ্রিয় এসব পণ্য। বাংলাদেশে জাত ভেদে কয়েক প্রকারের মাছ পাওয়া যায়। সাধারণত বরাক, বেথুয়া, তল্লাসহ বেশ কয়েক জাতের বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় এসব পণ্য। প্রতি বৃহস্পতিবার বসে ঐতিহ্যবাহী আহসানগঞ্জের এই হাট। হাটে আসা আত্রাই উপজেলার বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম জানান, বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্য এটি বাংলার ইতিহাস। বাপ-দাদার আমল থেকে এর ব্যবহার আমরা দেখে আসছি। এখনো এসব পণ্য কিনে ব্যবহার করি আমরা। তবে এসব পণ্যের বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিকের পণ্য এসেছে বাজারে। কিন্তু বাঁশ ও বেতের মতো এত টেকসই হয় না। প্লাস্টিকের জিনিসপত্র অল্পতেই ভেঙে যায়। কিন্তু বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্রগুলো হাত থেকে পড়ে গেলেও কিছু হয় না। আবার প্লাস্টিকের তুলনায় এসব পণ্যটিকে টেকসই হয় অনেক দিন। হাটে আসা বাঁশপণ্যের এক বিক্রেতা জাহাঙ্গীর জানান, গৃহস্থালি ও কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য এমন কিছু নেই যা এই হাটে পাওয়া যায় না। আহসানগঞ্জ এই হাট প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো। এই হাটে আমাদের বাবার বাবারা এসব পণ্য বিক্রি করেছেন। এখন আমরা এই ব্যবসা করে জীবন নির্বাহ করছি। বাঁশ ও বেতের তৈরি এসব পণ্য এখনো চাহিদা রয়েছে অনেক। আরেকজন বিক্রেতা জানান, একটা সময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসত এই হাটে এসব পণ্য কিনতে। তবে এখনো আসে তবে কম। প্লাস্টিক আসার ফলে ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। কিন্তু এখনো চাহিদা রয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাঁশের দাম। তাই লাভের অংশ কিছুটা কমলেও চাহিদা কমেনি খুব একটা। নওগাঁ কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বর্তমান সময়ের প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে তা আগামী সময়ের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই পরিবেশ বান্ধব এসব বাঁশ পণ্যের বাজার প্রসারে কাজ করা যায় এ বিষয়ে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি তারা যদি আমাদের কাছে আসে তাহলে আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত