কেশবপুরে পাঁজায় প্রকাশ্যে কাঠ দিয়ে পুড়ছে ইট

প্রশাসন নীরব

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরের অধিকাংশ পালপাড়ার পাঁজায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের পরিবর্তে প্রকাশ্যে কাঠ দিয়ে অবৈধভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এতে এলাকার বৃদ্ধসহ শিশুরা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলার মাদারডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জগন্নাথ পাল প্রতিকার চেয়ে গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে কমবেশি পাল সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস রয়েছে। পারিবারিকভাবে এ সম্প্রদায়ের লোকেরা মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরিসহ বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমান প্লাস্টিক, অ্যালুমোনিয়াম ও চীনা মাটির তৈরি জিনিসপত্রের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হওয়ায় পর্যায়ক্রমে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদর কমে গেছে। যে কারণে পাল সম্প্রদায়ের অনেক লোকেরা পেশা পরিবর্তন করে ভিন্ন পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু কিছু কিছু পরিবার বাপ-দাদার এ পেশাকে আঁকড়ে ধরলেও মাটির তৈরি জিনিসপত্রের পরিবর্তে পাঁজায় পোড়াচ্ছে ইট। ভাটায় পোড়ানো ইট থেকে এ ইটের বাজার মূল্য কম হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে এর কদর অনেক বেশি। যে কারণে পাল সম্প্রদায়ের লোকেরা ইট তৈরিতে ঝুঁকে পড়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদারডাঙ্গা এলাকাটি অত্যাধিক ঘনবসতিপূর্ণ। এলাকার গৌরপালের ৩ ছেলে জগদিস পাল, জয়দেব পাল ও রবিন পালসহ ১০ থেকে ১২টি পরিবার মাটির তৈরি জিনিসপত্র তৈরির পরিবর্তে দীর্ঘদিন ধরে পাঁজায় কাঠদিয়ে অবৈধভাবে ইট পোড়াচ্ছেন। এতে এলাকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই পাঁজার কালো ধোঁয়ায় এলাকার আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। এতে এলাকার বৃদ্ধসহ শিশুরা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পাঁজার কালো ধোঁয়ায় এলাকার ফলদ বৃক্ষসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিটি পাঁজার সামনে শতাধিক মণ কাঠপ্রকাশ্যে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এতে এলাকার খেঁজুর গাছসহ বৃক্ষ উজাড় হচ্ছে। পাঁজায় কাঠের পরিবর্তে কয়লা পোড়ানোর দাবি এলাকাবাসীর। এ ব্যাপারে পাঁজার মালিক জয়দেব পাল জানান, আমাদের মাঠে কোনো জায়গা জমি নেই। বাপ-দাদার হাতে এ কাজ শিখেছি। মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা না থাকায় বাধ্য হয়ে ইট পোড়ানোর কাজ করছি। এ কাজ না করলে আমরা খাব কি? উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুহিন হোসেন বলেন, এ ঘটনায় এলাকা থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।