ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরদীতে পৌরসভার টোল আদায়ের নামে সড়কে চাঁদাবাজি

ঈশ্বরদীতে পৌরসভার টোল আদায়ের নামে সড়কে চাঁদাবাজি

ঈশ্বরদীতে পৌরসভার টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়কের পাশে রঙ্গিন ছাতা ও কাঠের বেঞ্চ নিয়ে একটু আড়ালে দলবদ্ধভাবে বসে আছে কয়েকজন যুবক। হাতে রয়েছে রশিদ ও কলম। ব্যাটারি ও ইঞ্জিনচালিত মালবাহী ট্রাকসহ ছোট-বড় যানবাহন দেখলেই দৌড়ে এসে মহাসড়কেই থামিয়ে দিচ্ছে। রসিদ দিয়ে চালক ও তার সহকারীর কাছ থেকে টোলের নামে আদায় করা হচ্ছে টাকা। রসিদে ইজারাদারের নাম লেখা রয়েছে।

টাকা দিতে না চাইলে চালকদের সঙ্গে আদায়কারীর ঝগড়াবিবাদ লেগে থাকে। দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকে রাখার ঘটনাও ঘটছে। এভাবেই প্রকাশ্যে পৌরসভার টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির দৃশ্যের দেখা মিলেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের আলহাজ মোড়সহ কয়েকটি এলাকায়। জানা গেছে, মহাসড়কে যানবাহন থামিয়ে টোল আদায় বন্ধ করতে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিটপিটিশন নং-৪৬৪০/২০২২-এর মোতাবেক গত ২১ এপ্রিল আদেশের আলোকে টার্মিনাল ব্যতিরেকে সড়ক-মহাসড়ক থেকে টোল আদায় না করার জন্য সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক বিজ্ঞপ্তি জারি করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। হাইকোর্টের অনুলিপি অনুযায়ী টার্মিনাল ছাড়া টেন্ডার হয় না। পৌরসভার বিধানের ৯৮ ধারার ৭নং অনুচ্ছেদ অনুসারে শুধু পৌরসভা নির্মিত টার্মিনাল ছাড়া পার্কিং ফির নামে টোল আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। অথচ এখানে ট্রাক টার্মিনাল না থাকলেও বছরের পর বছর ধরে পৌর উন্নয়নের নামে টোল আদায়ের রসিদ দিয়ে সড়কের একাধিক স্থানে চাঁদাবাজি চলছে। সূত্র জানায়, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাত্র ১ লাখ টাকায় পৌরসভা থেকে টোল আদায়ের ইজারা পান আবুল কাশেম। শহরের বকুলের মোড়, চাঁদআলীর মোড়, রেলগেট, ভেলুপাড়া মোড়সহ পাঁচটি স্থানে ইজারাদারের প্রায় ১৫ জন চাঁদা আদায় করছেন। মালবাহী ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, নছিমন, বাস, মিনিবাস থেকে ৫০ টাকা, অবৈধ ইঞ্জিনচালিত ভটভটি থেকে ২০ টাকা ও পণ্যবাহী ব্যাটারিচালিত ভ্যান থেকে ১০ টাকা করে আদায় হয়। প্রতিদিন প্রায় চার শতাধিক যানবাহন থেকে ৩২ হাজার টাকা চাঁদা উঠে। হিসাব করলে দেখা যায়, মাসে ৯ লাখ এবং বছরে ১ কোটি টাকার বেশি আদায় হয়। রাতে উল্লেখিত মূল্যের থেকে বেশি পরিমাণে, অনেক সময় রসিদ ছাড়াই চাঁদা দিতে হয় বলে অভিযোগ চালকদের।

ইজারাদার আবুল কাশেম বলেন, পৌরসভার অনুমতিক্রমে ইজারার মাধ্যমে টাকা তোলা হয়। প্রতি বছরই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দায়িত্বে থাকা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে পৌরসভাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে টোল আদায়ের ইজারা নেওয়া হচ্ছে। পৌরসভার মেয়র ইসাহক আলী মালিথা বলেন, পৌরসভা থেকে ডাক হয়ে পৌর এলাকার ভেতরে মালামাল আনলোডের সময় টোল আদায় হয়। তবে সিএনজি বা অটো থেকে আদায় করা হয় না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, নসিমন, করিমন, ভটভটি এগুলো থেকে আদায় হয়। ১ বছরের জন্য ইজারা দিয়ে পৌরফান্ডে টাকা পাই। পৌরসভার উন্নয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে টোল আদায় হচ্ছে। ইজারার মাধ্যমে এটি সম্পূর্ণ বৈধ উপায়ে আদায় হচ্ছে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সব জায়গাতেই টোল আদায় করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত