থামছে না সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ শিকার

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ ও কাঁকড়া শিকার অব্যাহত থাকায় মৎস্যজাত প্রাণীর প্রজনন ব্যাহত হলেও বনবিভাগের ভূমিকায় নানা প্রশ্ন সচেতন মহলে।

সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের বন ফাঁড়ি পুষ্পকাটি নোটাবেকী, দোবেকী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মাছ শিকার অব্যাহত রয়েছে। জেলেরা জানান, সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী, কদমতলা, কৈখালী, কোবাদক থেকে বৈধ পাশ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশের পর ওই সব ফাঁড়িগুলোর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে অভয়ারণ্যে এলাকায় মাছ ধরছে কিছু অসাধু জেলে। যে কারণে ফাঁড়ি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে মাছ ধরছে তারা।

বিশেষ করে প্রতি গোনে (অমাবস্যা ও পূর্ণিমায়) তারা অভয়ারণ্যে মাছ ধরে। এছাড়া অনেক জেলে বৈধ অনুমতি না নিয়ে শুধু ফাঁড়ি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তিতে মাছ ধরছে। বহুবার লোকালয়ে আসার পর ওইসব অবৈধ মাছ আটক করছে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হাসান চৌধুরী।

মামলাও হয়েছে তবুও থেমে নেই ফাঁড়ি কর্মকর্তা-কমর্চারী ও অসাধু জেলেরা। কয়রা, বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, কালিঞ্চি, টেংরাখালী, কৈখলী এলাকার জেলেরা জানান, ৫ থেকে ৬ জনের জেলের দল একটি নৌকা নিয়ে অভয়ারণ্যে মাছ ধরলে ফাঁড়ি কর্মকর্তাদের প্রতি গোনে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা দিতে হয়। যখনই ঊর্ধ্বন বন কর্মকর্তারা আসেন, তখন ফাঁড়ি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সিগন্যাল দিয়ে জেলেদের ছোট খালে প্রবেশ করার জন্য সুযোগ করে দিচ্ছে।

এভাবে মাছ ধরার কারণে সহকারী বন সংরক্ষক নোটাবেকী অফিস কর্মকর্তা সাহাদৎ হোসেনকে সতর্ক এবং বিভাগীয় মামলা দিলেও থেমে নেই তারা। বিশেষ করে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের দোবেকী, নোটাবেঁকী, হলদেবুনিয়া, ডিঙ্গিমারী, পাকড়াতলী, ছায়া, বালিঝাকী, আঙ্করা কোনা, মান্দারবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শতশত ডিঙি নৌকা নিয়ে মাছ ধরলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

যে কারণে সুন্দরবনের নদী ও খালে মৎস্যজাত প্রাণীর প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক একেএম ইকবাল হাসান চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ ধরার কোনো অনুমতি নেই। কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ ধরলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কথা হয় বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন অফিসার হাবিবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বৈধ পাস ছাড়া কাউকে সুন্দর বনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।