ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করে নবান্ন উৎসব

ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করে নবান্ন উৎসব

কৃষক জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পরও জমিতে ইঁদুরের গর্তে পাওয়া যায় শীষ কাটা ধান। আর এই ধানের খোঁজে প্রতিদিনই কৃষিজমিতে বিরামহীন ঘুরে বেড়ায় দূরন্ত শিশুরা। তারা সেই গর্ত খুঁড়ে ধান বের করে। সারাদিনে ৫ থেকে ৬ কেজির মতো ধানের শীষ কুড়িয়ে থাকে ওই শিশুরা। চলতি আমন মৌসুমে সোনালি ধানের ঘ্রাণে ভরে আছে কৃষকের মাঠ ও আঙিনা। শীত আসার আগে ভাগে ধান ঘরে তুলতে পেরে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। ধান খেতের ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধান বের করছে শিশুরা। এসব ধান কুড়ানি শিশু-কিশোরা প্রতিদিন দল বেঁধে ছুটে যায় ফসলের মাঠে। বর্তমানে ধান কাটা-মাড়াই ঘিরে যখন গৃহস্থ পরিবারের উৎসব চলছে। ঠিক তখনই ভূমিহীন পরিবারগুলোর শিশুরা খুঁজে বেড়াচ্ছে কৃষকের কেটে নেওয়ার সময় ঝরে পড়া ধান। সকাল বা বিকাল কিংবা মিষ্টি রোদে হাতে ব্যাগ ও কাঁধে কোদাল আর বাশিলা নিয়ে মাঠে ছুটছেন তারা। যখন ধানের পরিমাণ বেশি হয় তারা বেচে দেয়। অনেকে আবার পিঠাপুলি খাওয়ার জন্য জমিয়ে রাখে সেই ধান। এ ধান কুড়িয়ে কারো আবার বছরের একবেলা খাবার কিংবা বছরে অন্তত একদিন পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়। গতকাল সকালে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের কাউয়ার দোলায় ধান কুড়াতে ব্যস্ত শিশু সেলিম, গুলজার ও সাদেকুল। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলে, কৃষকরা যখন খেত থেকে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক ধানের ছড়া এমনিতেই পড়ে থাকে, সেগুলো আমরা কুড়িয়ে থাকি। এছাড়াও ক্ষেতে ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে পাওয়া যায় অনেক ধান। ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধান সংগ্রহ করতে আসা শিশু সেলিম হোসেন বলে, আমার বাবা-মা পরের জমিতে কাজ করেন। আমন মৌসুমে আমরা খেত-খামার থেকে ধানের শীষ সংগ্রহ করি। অভাব অনটনের সংসারে ধান কুড়িয়ে শীতের সময় পিঠা খাব। কৃষক জাকারিয়া বলেন, আগে মাঠজুড়ে ধান কুড়ানি শিশুদের আনাগোনা ছিল অনেক বেশি। এক সময়ে ধান কাটার একটা উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। এখন সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে, শিশুরা এখন নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। আগের সেই দৃশ্য আর দেখা যায় না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত