ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মাঠে মাঠে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

মাঠে মাঠে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধানের হাসি! মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় রোপা আমন ধান কৃষক সার্থকতার চিহ্ন হয়ে মাঠভরে রয়েছে। দিনব্যাপী চলছে ধান কাটার কর্মযজ্ঞ। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায় পুরোদমে চলছে ধান কাটার কাজ। কিছু এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখনও দোল খেতে দেখা যাচ্ছে সোনালি ধান। চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। কৃষকরা তাদের টার্গেটের কাছাকাছি ধান পেয়ে অনেক আনন্দিত। শ্রীমঙ্গলে এবার আমন ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন চাষিরা। ধান কাটা-মাড়াইয়ে কৃষকের পাশাপাশি দিনমজুরদের মাঝেও বেড়েছে চরম ব্যস্ততা। উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের টিকরিয়া, আশিদ্রোন, কপালী পাড়া, রামনগর এলাকা এবং শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের জেটি রোড ও ভাড়াউড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে চালের দাম চড়া থাকায় এবার লাভও বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। টিকরিয়া কপালী পাড়ার কৃষক বাবুল কপালী বলেন, ‘আমরা গত বছরের চেয়ে এ বছর অনেক বেশি ধান পেয়ে খুশি হয়েছি। সরকার যদি বেশি দামে ধান কিনে তাহলে আমরা আরও খুশি হবো।’ ধান মাড়াই শ্রমিক সোহেল রানা জানান, প্রতি বিঘা জমির ধান মেশিনে মাড়াই করতে স্থান ভেদে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার শ্রীমঙ্গলে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৩৬৫ হেক্টর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমন চাষ হয় অর্থাৎ মোট আমন চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে। কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, চলতি মৌসুমে শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের বারি হাইব্রিড-৬, হীরা-১০, এজেড-৭০০৬, সুবর্ণ-৮ জাতের ধানের চাষ হয়েছে। এছাড়াও উফশী জাতের বিআর-১১ ও ২২, ব্রি ধান- ৩২, ৩৪, ৪৯, ৫২, ৭১, ৭৫, ৮৭, ৯৩, ৯৪, ৯৫ এবং বিনা-৭, ১১, ১৬, ১৭ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় জাতের ধানও চাষ করা হয়েছে। এর নামগুলো হলো- বিরইন, বালাম, কালিজিরা ও চিনিগুড়া জাতের ধান। কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান জানান, ‘এবার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ১৪২ মেট্রিক টন। যা থেকে চাল উৎপাদন হবে ৪৫ হাজার ৬৩৪ মেট্রিক টন।’ উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা রকেন্দ্র শর্মা জানান, ‘রোপা আমন ধানের মাঠে পোকাণ্ডমাকড় ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবার আমন ধানের ফলন বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক আমন ধান উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।’ শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো বীজ ও সার পাওয়ায় এবার শ্রীমঙ্গলে রোপা আমনের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এবার আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত