ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চলনবিলে বাউত উৎসব

মাছ না পেয়ে হতাশ শিকারিরা
চলনবিলে বাউত উৎসব

পাবনার চলনবিলসহ স্থানীয় বিলগুলোতে শুরু হয়েছে বাউত উৎসব। এই উৎসবে মেতেছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা সৌখিন মৎস্য শিকারিরা। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার রুহুল বিলে দলবেঁধে মাছ ধরার এই আয়োজনের নাম ‘বাউত উৎসব’। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই বাউত উৎসবে অংশ নেন নানা বয়সি হাজারো মানুষ। তবে এই বছরে বিলে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ বাউতে আসা মৎস্য শিকারিরা। তাদের অভিযোগ, অবৈধ চায়না জাল আর গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। তাই বাউত হারাচ্ছে তার উৎসবের আমেজ। একইসঙ্গে ধ্বংস করা হচ্ছে দেশি মাছের প্রজনন ক্ষেত্র। জানা গেছে, জেলার চলনবিলের রুহুল বিল, ডিকশির বিল, রামের বিল, শ্যওলার বিলসহ জেলা চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদুপুর উপজেলার বিভিন্ন বিলে মাসব্যাপী চলে এই বাউত উৎসব। সূর্য ওঠার আগেই ভোর থেকে নিজেদের পরিবহন করে বাউত উৎসবে বিলে আসতে থাকে মানুষ। কারো হাতে পলো, কারো হাতে ঠেলা জাল আবার কারো হাতে ধর্মজাল। দল বেঁধে সারি সারি মানুষ ছুটে আসছে বিলপারে। কারণ একটাই উন্মুক্ত জলাশয়ে মনের আনন্দে মাছ ধরেন তারা।

মাছ ধরা পরার সঙ্গে সঙ্গে মনের আনন্দে চিৎকার করে উঠবে পাইছিরে একটা বিশাল বোয়াল অথবা রুই কাতলা মাছ। এবারে বাউতের গল্পটা পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার চলনবিলের অংশ রুহুল বিলের। তবে এবারে বাউতে মাছ ধরতে আসা মৎস্য শিকারিরা হতাশা হয়েছেন। হাজার হাজার টাকা খরচ করে রাতের ঘুম হারাম করে এই বাউতে এসে মাছ পাননি তারা।

স্থানীয় মৎস্য শিকারি বাধন সরকার বলেন, আগে বাউতে বিলের চার পাশের গ্রামের মানুষ ছোট-বড় সবাই মিলে মাছ ধরতে যেত। নানা প্রকারের ছোট-বড় মাছ ধরত তারা। তবে মাছের জন্য অভয়াশ্রম যেখানে থাকত, সেখানে তারা যেতেন না। আর এখন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাছ ধরে উৎসবের পাশাপাশি দেশি মাছের বংশ ধ্বংস করছে একটি চক্র। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা দরকার। তাণ্ডনা হলে আগামী প্রজন্ম একদিকে যেমন বাউত উৎসব দেখতে পারবে না, অন্যদিকে দেশি মাছ আহার থেকে বঞ্চিত হবেন সবাই। ভাঙ্গুড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, বাউত উৎসব গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতির অংশ। তবে নিয়ম মেনে সেটি কেউ পালন করছে না। তাই আমরা বাউত উৎসবকে নিরুৎসাহিত করছি। বিলে একসঙ্গে হাজার হাজার মানুষের মাছ ধরার কারণে জলজ জীববৈচিত্র্যসহ সব ধরনের মাছের ক্ষতি হয়। আর অবৈধ উপকরণের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

তবে লোকবল সংকটের কারণে দেশি মাছ সংরক্ষণ বা অবৈধ মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে সেইভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। তাই সবাইকে বিশেষ করে স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ ও মৎস্য শিকারিদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত