ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ অভয়নগর মুক্ত দিবস

আজ অভয়নগর মুক্ত দিবস

আজ ৯ ডিসেম্বর, ঐতিহাসিক যশোরের অভয়নগর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের দামাল ছেলেরা পাক-হানাদার বাহিনীর নির্মমণ্ডনির্যাতনের হাত থেকে মুক্ত করেছিলেন অভয়নগরবাসীকে। সেই সঙ্গে অভয়নগরের আকাশে স্বাধীনতার সূর্য ওঠে এবং পাক-হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় এ অঞ্চলের মানুষ। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সঙ্গে নেমে আসে মুক্তিপাগল আপামর জনতা। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে সেদিনের সাহসী সন্তানরা বুকের তাজারক্ত ঢেলে দিয়ে মুক্ত করেছিল এই অভয়নগরকে। অভয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক আলি আহম্মাদ খান যুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। পাক-হানাদার বাহিনীর হাত থেকে অভয়নগরবাসীকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে পর্যায়ক্রমে ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে খড়লিয়ার শ্যাম দারোগার বাড়িতে অবস্থান করেন। সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎখাত করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর জোরাল আক্রমণ চালায়। অভয়নগর, ফুলতলা, কালিয়া ও নড়াইল চার এলাকা থেকে গেরিলা আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিরোধ করে।

৬ ডিসেম্বর যশোর জেলা মুক্ত হওয়ার পর ৭ ডিসেম্বর যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এসে এ উপজেলার শিল্পাঞ্চল নওয়াপাড়া রাজঘাট সব মিল-কারখানায় ক্যাম্প গড়ে তোলে এবং বর্বর নির্যাতন চালাতে শুরু করে।

৮ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে হানাদার বাহিনীর রাজঘাট ও শেষ সীমানার মধ্যবর্তী স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এ সময় মেজর জলিলের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনী টেকা নদী পার হয়ে এই উপজেলায় প্রবেশ করেন এবং যৌথভাবে আক্রমণ করলে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। একপর্যায় শিরোমনি ও ফুলতলা এলাকা দিয়ে পাক-হানাদার বাহিনীরা খুলনার দিকে পালিয়ে যায়। ৯ ডিসেম্বর অভয়নগরবাসী শত্রু মুক্ত হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত মুক্ত অভয়নগরের হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ সকল শোককে শক্তিতে পরিণত করে আনন্দণ্ডউল্লাসে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং অভয়নগরের আকাশে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে পাক-হানাদার বাহিনীর হাত থেকে অভয়নগরবাসী হয় মুক্ত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত