নওগাঁয় বেড়েছে শীত বস্ত্র বেচাকেনা

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

বৈরী আবহাওয়ায় নওগাঁয় হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। গরম কাপড়ের চাহিদা বাড়ায় দোকানে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। ব্যস্ত সময় পার করছে দোকানিরা। দিনে বিক্রি অন্তত ৩ কোটি টাকা। শীতের গরম কাপড় কিনতে সাধ্যের মধ্যে ক্রেতারা ছুটছেন শপিংমলের বিভিন্ন বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে। এ বছর শুরুতে শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকলেও গত তিন দিনে বেড়েছে শীত। তবে শীত যত বাড়বে বেচাকেনা তত জমজমাট হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। এ বছর গরম কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্রেতারা। বছরের শেষ সময়ে জেলায় শীতের তীব্রতা কিছুটা কম ছিল। তবে বৈরী আবহাওয়ায় হঠাৎ করেছে গত তিনদিন থেকে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। বলা যায় উত্তরের জেলায় এখন পুরোদমে শীতের আমেজ বিরাজ করছে। শীত পড়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। শহরের আভিজাত্য গীতাঞ্জলি শপিং কমপ্লেক্স, দেওয়ান বাজার, আনন্দ বাজার ও কাপড়পট্টিসহ কয়েকটি শপিংমলগুলোতে বিভিন্ন গরম কাপড়ে পসরা দিয়ে সাজানো হয়েছে। এসব দোকানে গোলগলা ও হাইগলার গেঞ্জি, হুডি, সোয়েটার, মাফলার, জ্যাকেট, ব্লেজার, কাটিগানসহ অন্যান্য গরম পোশাক ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। বাচ্চাদের পোশাক দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা, জ্যাকেট ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা এবং ব্লেজার ২ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দরদাম করে কিনছেন ক্রেতারা। অনেকে তাদের পছন্দের পোশাক পেয়েও যাচ্ছেন। জেলার ১১টি উপজেলায় প্রায় ১২০০ পোশাকের দোকান রয়েছে। শীত মৌসুমের ২ মাসে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার শীতের পোশাকের বাণিজ্যের আশা ব্যবসায়িদের।

ব্যবসায়িরা জানান, জেলায় এ বছর শীত কিছুটা দেরিতে পড়ছে।

শীতকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের নজর কাড়তে বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় দিয়ে দোকানগুলো সাজানো হয়েছে। শীত কম থাকায় বেচাকেনা কম হচ্ছিল। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। তবে হঠাৎ করে শীত বাড়ায় বেচাকেনা বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কাপড়ের দাম বাড়ায় বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। তবে শীতের তীব্রতা যদি না বাড়ে অনেক ব্যবসায়ী লোকসানের আশঙ্কা করছেন। এদিকে শীতে গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা ছুটছেন ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। সাধ্যের মধ্যে শিশুদের শীতের পোশাক পেয়ে যাচ্ছেন। যেখানে ১০০-৪০০ টাকা মধ্যে বাচ্চাদের জন্য মোটা পায়জামা, হাইগলার গেঞ্জি ও টপস পাওয়া যাচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রোতারা। তবে বেচাকেনা ভালো বলে জানান ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। শহরের ব্রিজ মোড় ফুটপাতের পোশাকের এক দোকানি বলেন, গত দুই থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। প্রতিদিন ৪-৬ হাজার টাকা বেচাকেনা হচ্ছে। সাধ্যের মধ্যে বাচ্চাদের জন্য ১০০-৪০০ টাকার মধ্যে শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ী সাদাত আহমেদ বলেন, এ বছর লাগাতার হরতাল-অবরোধ। তার মধ্যে শীতের প্রকোপ কম। শীত কম থাকায় প্রতিদিন বেচাকেনা ২০-২৫ হাজার টাকা। বিক্রি কম হওয়ায় বলা যায় লোকসান হচ্ছে। তবে শীত বাড়ায় বিক্রি বেশি হলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারব। নওগাঁ গার্মেন্টস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহম্মেদ বলেন, জেলা শহরে প্রায় দুইশতাধিক পোশাকের দোকান রয়েছে। এবছর দেরিতে শীত পড়েছে। শুরুতে শীত থাকায় ব্যবসায়িরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে শীতের আমেজ পড়তে শুরু করায় বেড়েছে বেচাকেনা। প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে ২০-২৫ হাজার টাকা বেচাকেনা হচ্ছে। সে হিসেবে দিনে অন্তত ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হচ্ছে। তবে শীত বাড়লে বেচাকেনা আরো বাড়বে বলে জানান ব্যবসায়ী এ নেতা।