নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে স্বর্ণ লুট

৬০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার, গ্রেপ্তার সাত

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারের নৈশ প্রহরীকে হত্যা করে দুটি স্বর্ণের দোকান থেকে লুট করা স্বর্ণের মধ্যে ৬০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সাত ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হলো। অভিযানে ৬০ ভরি স্বর্ণ ছাড়াও লুণ্ঠিত ১৬০ ভরি রূপা ও স্বর্ণ বিক্রির তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া একটি দেশি পাইপগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ ও একটি পাইপ জব্দ করা হয়। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম। এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর ভোররাতে কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারের মা-মনি জুয়েলার্স ও নুর জুয়েলার্সে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তবে লুট হওয়া স্বর্ণের দাম প্রায় তিন কোটি টাকা বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। এদিকে, পুলিশের ভাষ্য, দুটি দোকান থেকে সর্বমোট ৭২ ভরি স্বর্ণ লুট করে ডাকাত দল।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামের মৃত শহীদুল্লার ছেলে মো. নোমান, একই জেলার কমলনগর থানার চর মার্টিন ইউনিয়নের পশ্চিম চর মার্টিন গ্রামের মোরশেদ আলমের ছেলে মো. সুজন হোসেন, কমলনগর থানার হাজিরহাট ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির সুভাষ চন্দ্র সরকারের ছেলে কৃষ্ণ কমল সরকার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নদোনা ইউনিয়নের জগজীবনপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. শাহাদাত হোসেন, একই উপজেলার বজরা ইউনিয়নের মুসলিম গ্রামের হাজী বাড়ির মো. সোলেমানের ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন জিতু, বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার করিমপুর এলাকার মুন্সি বাড়ির মৃত অলি উল্যার ছেলে সালাউদ্দিন, কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের জৈনদপুর গ্রামের মোশারফ বিএসসির বাড়ির মৃত মো. শহীদুল্লার ছেলে মো. মিজানুর রহমান রনি। প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, গত শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ১০-১৫ জনের একটি ডাকাত দল চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে ঢুকে অস্ত্রের মুখে নৈশ প্রহরীসহ অন্যান্য চলাচলকারী লোকজনকে জিম্মি করে। এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে দুই দোকান লুট করে। এতে বাধা দিলে নৈশ প্রহরী শহীদুল্লাহর মাথায় আঘাত করে ডাকাতরা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। হত্যা ও ডাকাতির ঘটনায় কবিরহাট থানায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গত শুক্রবার রাতে পেনাল কোড ৩৯৬ ধারায় একটি মামলা করেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ডাকাতদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানের চালক নোমান লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানা এলাকায় লুন্ঠিত মালামাল বিক্রির চেষ্টা করছেন- এখন খবর পেয়ে পুলিশ নোমানের অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে গত রোববার কমলনগর থানার মুন্সিরহাট এলাকা থেকে নোমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার ভাষ্যমতে, তারা ডাকাতির স্বর্ণ পরিচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. সুজনের কাছে বিক্রি করার জন্য দেন। পরে সুজনকে তার বাড়ি থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুজন লুণ্ঠিত মালামাল নেওয়ার এবং বিক্রিতে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেন। সুজন জানান, লুণ্ঠিত স্বর্ণ কমলনগর থানার চর লরেন্স বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী কৃষ্ণ কমলের কাছে বিক্রি করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ৬০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয় এবং ১৬০ ভরি রুপা সুজনের থেকে উদ্ধার করা হয়। মূলত এ ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী মো. শাহাদাত।