খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটছে গাছিদের

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচএম আরিফ, কুষ্টিয়া

নানা রকমের বাহারি পিঠাপুলির জন্য খেজুর গুড় বা খেজুর রসের জুড়ি মেলা ভার। আবহমান বাংলায় শীতে সবসময়ই খেজুর রসের বাড়তি চাহিদা থাকে। শীতের মিষ্টি জাতীয় সুস্বাদু খাবার তৈরিতে খেজুরের গুড়েরও চাহিদা থাকে অনেক। আর এর চাহিদা মিটাতে শীতের শুরুতেই খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কুষ্টিয়ার গাছিরা। গ্রামীণ মেটো পথ বা সবুজে ঘেরা মাঠে সারিবদ্ধভাবে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা খেজুরগাছগুলো এখন গাছিদের দখলে। বিকাল হলেই তারা মাটির কলসি নিয়ে গাছের মাথায় ওঠেন রস আহরণে। আর ভোরের কুয়াশা ভেদ করে সূর্য ওঠার আগেই তা নামিয়ে জ্বাল দিয়ে তৈরি করেন খেজুর গুড়। আবার অনেকে গাছিদের কাছ থেকে টাটকা রস সংগ্রহ করে তা তৃপ্তিসহকারে পান করে থাকেন। রাজাশাহীর বাঘা ও নাটোর জেলার লালপুর থেকে গাছিরা এসেছেন কুষ্টিয়ায় খেজুর রস ও গুড় সংগ্রহ করতে। শীত মৌসুমের ৪ মাসের আয় দিয়ে বছরের অন্যান্য সময়ের আর্থিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন তারা। খরচ বাদ দিয়ে এক একগাছির শীত মৌসুমে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন তারা।

গতকাল সকালে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের দফাদারপাড়া গ্রাম যা অনেকে ‘খেজুরপল্লী’ হসেবে জানেন। আর এ খেজুরপল্লীর ভেজালমুক্ত খেজুরের রস বা গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় সকাল ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা তা সংগ্রহ করতে ছুটে আসেন এই পল্লীতে। ভেজালমুক্ত প্রতি কেজি গুড় ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় ক্রয় করতে পেরে খুশি ক্রেতারা। খুশি সুস্বাদু টাটকা রস সংগ্রহ করতে পেরেও এমনটি জানিয়েছেন রানা হোসেন নামে এক স্থানীয় ক্রেতা। মো.রতন আলী খেজুর গুড় সংগ্রহ করে অনলাইনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করে থাকেন। তার মতো অনেকে অনলাইনে খেজুর গুড় সংগ্রহ ও বিক্রয় করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কুষ্টিয়া জেলায় ১২২ হেক্টর খেজুরের আবাদ হলেও সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায় ৪০ হেক্টর আবাদে রয়েছে ২০ হাজার খেজুরগাছ। যা থেকে এক মৌসুমে ২৬০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হয়ে থাকে। দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার খেজুর গুড় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশ বিদেশে বিক্রি হচ্ছে।