আজ মহান বিজয় দিবস। এ দিবসকে ঘিরে জমজমাট বেচাকেনা হয়েছে ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী ফুলের পাইকারি বাজারে। গদখালী থেকে ১১ ধরনের ফুল সারাদেশে গেছে। গতকাল বিকেল থেকেই বড় বড় চালানের বেচাকেনা শুরু করে ফুলের খুচরা ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ভালো দামে ফুল বিক্রি করতে পেরে খুশি ফুলচাষিরা। গতকাল ভোর থেকে গদখালীর ফুলের পাইকারি বাজার মিলতে দেখা যায়। খুলনা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, বরিশাল, মাদারীপুর, ঢাকা, সাভার, মাগুরা, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা ফুল কিনতে আসেন এ বাজারে। চাষি ও পাইকারদের সঙ্গে দরাদরি শেষে কাঙ্ক্ষিত মূল্যে ফুল কিনে গন্তব্যে ফিরে গেছেন তারা। কেউ ট্রাকে আবার কেউ বাসের ছাদে বস্তায় করে ফুল পরিবহন করে নিয়ে গেছে। অন্যান্য দিন সকাল ৮টা থেকে ৯টার আগে বাজার ভেঙে গেলেও গতকাল বেলা ১২টা পর্যন্ত চলেছে বেচাকেনা। গতকাল গদখালীর ফুলের পাইকারি বাজারে গোলাপ ফুল প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা, চায়না গোলাপ লং স্টিক গোলাপ প্রতি পিস ১৫ টাকা, রজনিগন্ধা স্টিক প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা, গ্লাডিওলাস ফুল কালার ভেদে প্রতি পিস ২৫ থেকে ৩০ টাকা, জারবেরা ফুল প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৫ থেকে ৬ টাকা, গাঁদা ফুল প্রতিহাজার ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, জিপসি ফুল প্রতি আঁটি ৩০ টাকা ও কামিনী পাতা প্রতি আঁটি ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুলনা থেকে ফুল কিনতে আসেন রবিউল হোসেন রবি। তিনি বলেন, অন্যান্য দিন ফোন করে দিলে এখানকার ব্যবসায়ীরা ফুল বাসে করে পাঠিয়ে দিতো। বিজয় দিবসে ফুলের ডালা সাজানোর জন্য চাহিদা অনেক, এজন্য সশরীরে এসেছি ফুল কিনতে। ঢাকার সাভার থেকে ফুল কিনতে এসে বিল্লাল হোসেন জানান, সাভারে ফুল পাওয়া গেলেও তার মান ও দামের সঙ্গে মিলে না। এজন্য রাতে বাসে করে গদখালী এসেছেন। ফুল কিনে দুপুরেই আবার ফিরবেন। দাম অন্যান্য বারের মতো প্রায়ই সহনীয় বলে জানান তিনি। সৈয়দপাড়া এলাকার গোলাপ চাষি সোহেল রানা বলেন, গত দুইদিন আগে যেখানে গোলাপের দাম ছিল প্রতি পিস ৫ টাকা। সেখানে আজ দাম ১০ টাকা। দাম ভালো পাওয়ায় আমরা খুশি। যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, এবার ফুলের দাম অনেক ভালো। বাজারে ফুল ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। সামনে আরো কিছু দিবস রয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এ মৌসুমে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আমরা আশাবাদী। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, যশোর অঞ্চলের দেড় হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১১ ধরনের ফুলের চাষ হয়। দেশের মোট ফুল চাহিদার ৭০ শতাংশ চাহিদা মেটায় গদখালির ফুল।
