ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পিরোজপুরে চারাগাছ ফুলের স্বর্গরাজ্য

পিরোজপুরে চারাগাছ ফুলের স্বর্গরাজ্য

সন্ধ্যা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত উপকূলীয় গ্রাম অলংকারকাঠি। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার অলংকারকাঠি এখন সারা দেশে পরিচিত ফুলের জন্য। হঠাৎ দেখে মনে হবে যেন ফুলের চাদরে ঢাকা পড়েছে গ্রামটি। সারি সারি হলুদ, লাল, কমলা ও সাদা রং-বেরঙের ফুলে ফুলে ভরে আছে। নেছারাবাদের সড়ক ধরে বরিশালের দিকে যাওয়ার পথে অলংকারকাঠি বেইলি ব্রিজ পার হওয়ার পর থেকে সড়কের দুই দিকে যতদূর চোখ যায় সর্বত্রই দেখা যাবে নানা রং-বেরঙের ফুলের সমাহার। প্রায় ৭৫ বছর পূর্ব থেকে উপজেলার আকলম, অলংকারকাঠি, সুলতানপুর, সংগীতকাঠি, আরামকাঠিসহ ১০ থেকে ১২টি গ্রামে ফুলের চাষ হচ্ছে। সরেজমিন নার্সারিগুলো ঘুরে দেখা গেছে, অলংকারকাঠি ব্রিজ থেকে উত্তর শর্ষিনা পর্যন্ত সড়কের দু’ধারে প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে গড়ে ওঠা শতাধিক নার্সারিতে চারা উৎপাদনের ধুম পড়েছে। একই সঙ্গে জমে উঠেছে ফুলের চারা কেনাবেচা। তিনটি গ্রামের অংশ বিশেষ নিয়ে ওই পল্লি গড়ে উঠলেও এরই মধ্যে অলংকারকাঠি নামেই পরিচিতি লাভ করেছে। তিন থেকে চার সহস্রাধিক মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছে নার্সারি গ্রাম অলংকারকাঠীতে। ওই পল্লিতে সকাল-সন্ধ্যা লেগে থাকে ফুলপ্রেমী দর্শনার্থীদের ভিড়, যা একবার দেখলে বার বার ছুটে যেতে মন চায় এমন মন্তব্য করলেন নার্সারিতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে স্বরূপকাঠি পৌর শহরের পাশ গ্রাম উত্তর শর্ষিনা, অলংকারকাঠি ও কৃষ্ণকাঠী গ্রামের অংশ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়কের দুইধারে এসব নার্সারি অবস্থিত। প্রতিটি নার্সারিতে ১০ থেকে ১৫ জন করে শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী-শ্রমিকরাও কাজ করেন। এ জন্য তাদের ৪০০ টাকা ও পুরুষ শ্রমিকদের ৭০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিতে হয়। সব নার্সারিতে মাসিক বেতনে ও বাৎসরিক কর্মচারী রয়েছে। নার্সারি মালিকরা জানান, ফুলের চারা কলমের মাধ্যমে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে নার্সারিতে সব খরচ বাদ দিয়ে ৩ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। এত ব্যাপক ফুলের সমাহার দেখে প্রতিটি নার্সারিতে দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। যা সামাল দিতে মালিকদের হিমশিম খেতে হয়। অনেকে লিখে রেখেছেন এই এলাকায় প্রবেশ, ছবি তোলা বা ফুল ছেড়া নিষেধ। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিদিন শত শত ফুল নিয়ে যায় ও নষ্ট করে ফেলেন দর্শনার্থীরা। অলংকারকাঠি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক বলেন, সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে ওই পল্লিটি একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হবে। আর এ চাষের প্রসারতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি করেছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। নেছারাবাদ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা চপল কৃষ্ণ নাথ জানান, জেলার নেছারাবাদ উপজেলার নার্সারি শিল্প এরই মধ্যে দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। এ শিল্পকে আরো বিকশিত করার জন্য কৃষি অধিদপ্তরে পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। কিছু দিন আগে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে সরকারিভাবে এখানে একটি বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত