ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সয়লাব শ্যামনগর

অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সয়লাব শ্যামনগর

শ্যামনগরে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেরই নেই স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। কিছু প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স থাকলেও নবায়ন হয় না। এতে একদিকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে, অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, শ্যামনগর উপজেলায় বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ৫০টি। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী যে কয়েকজন নিজস্ব চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা নার্সসহ জনবল থাকার কথা, তা নেই কোনোটিতেই। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর নির্ভরশীল এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক চলছে প্রশাসনের নাকের ডগাতেই। ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ২০টির মতো এগুলো হলো ডক্টরস ডোরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফাতেমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বিসমিল্লাহ প্যাথলজি, শান্তি ডায়নস্টিক সেন্টার, ডিজিটাল ল্যাব, শ্যামনগর প্যাথলজি, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আল মদিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তট প্যাথলজি, মডেল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আল বারাকা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রিডা ডায়াগনস্টিক, সাইন্সন ল্যাব, প্রযুক্তি ডায়াগনস্টিক, নওয়াবেকী ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এছাড়াও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরও কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই প্যাথলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার থাকলেও তিনি চাকরির সুবাধে থাকেন খুলনা। ২/৩ সপ্তাহ পরে একদিন এসে প্যাডে স্বাক্ষর করে যান তাতেই চলতে থাকে রিপোর্ট দেওয়ার কাজ এমন অভিযোগ রয়েছে। এরপরও বছরের পর বছর চলছে এসব প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে কমিশন পাচ্ছে দালাল চক্র। ফলে উন্নত চিকিৎসাসেবার নামে মানুষ ঠকানোর ব্যবসায় পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। সদর হাসপাতাল থেকে দালালের মাধ্যমে রোগী ধরে এনে শরীরের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে এখানে। কাগজপত্র না থাকার কথা স্বীকার করে এক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছি।’ শুধু আবেদন করেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি ভুল হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নেই স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বলেন, সাতক্ষীরা জেলার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বেশিরভাগেরই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।

ছাড়পত্র না নিয়ে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান চালানোর কোনো সুযোগ নেই। জনবল সংকটের কারণে আমরা প্রতিনিয়ত এ বিষয়ে নজরদারি করতে পারছি না। তবে দ্রুতই অবৈধভাবে চলা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ‘সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন জানান, ‘জেলার সব ক’টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। যাদের লাইসেন্স নবায়ন নেই বা লাইসেন্স নেই, তাদের যথা শিগগিরই লাইসেন্স নবায়ন ও লাইসেন্স করতে বলা হয়েছে। তারা নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত