ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে আতঙ্কে মাটি ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাত্র একদিনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এক মাটি ব্যবসায়ীকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও চারটি ভেকু জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই অভিযান আতঙ্কে মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছে পুরো উপজেলার মাটি লুটেরারা। অনেকটা স্বস্তিতে সড়কে চলাচল করছে মানুষ। তবে এমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী। এলাকাবাসী ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম যেতে না যেতেই এক ফসলি ও তিন ফসলি কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে যায় মাটি লুটেরারা। তাদের ছোবল থেকে বাদ পড়ে না নদীর তীড়, খাল-বিল ও বন বিভাগের জমির মাটিও। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর উপজেলার শেওড়াতলী, পাকুরাইল, দরবাড়িয়া, উত্তর কাঞ্চানপুর, মেদীকাঞ্চানপুর, গোবিন্দাপুর, বড়ইবাড়ী, কালিয়াদহ, দীঘিবাড়ি, চাবাগান, শ্রীপুর পাকার মাথা, রগুনাথপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি লুটে নিচ্ছে মাটি লুটেরারা। কখনো অন্যের ফসল নষ্ট করে রাতের আঁধারে লুণ্ঠিত মাটি নিচ্ছে ইটভাটায়। আবার কখনো লুণ্ঠিত মাটি দিয়ে অবৈধভাবে ভরাট করা হচ্ছে কৃষি জমি বা জলাশয়। ওভারলোড করা মাটিবাহী চার বা ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কগুলো। বেপরোয়া মাটিভর্তি ট্রাকে ঘটছে দুর্ঘটনাও। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ ম্যানেজের মাধ্যমে মাটি কাটছে বলে কারো কোনো পরোয়া করছে না মাটি লুটেরারা। গত ১৭ ডিসেম্বর আদাবহ এলাকার ১৬-১৭ জন লোক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ, অন্যের ফসল ও সরকারি রাস্তা নষ্ট করে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। এরপর গত মঙ্গলবার বিকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি। তার নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য গুহ, কালিয়াকৈর থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা। ওইদিন রাত ৯টা পর্যন্ত শেওড়াতলী এলাকায় চলে এ অভিযান। অভিযান চালিয়ে ওই এলাকার সায়েদ হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলামকে ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং চারটি ভেকু জব্দ করা হয়। মাত্র একদিনের এমন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে উপজেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি জানান, অভিযান চালিয়ে একজনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও চারটি এক্সাভেটর (ভেকু) জব্দ করা হয়েছে। তবে কৃষি জমি রক্ষা এবং জোরপূর্বক অন্যের জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া অত্যাচারী মাটি দস্যুদের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।