ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হরতাল-অবরোধে পর্যটকশূন্য সুন্দরবন

হরতাল-অবরোধে পর্যটকশূন্য সুন্দরবন

হরতাল-অবরোধে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে সুন্দরবন পর্যটন খাতে। ভরা মৌসুমেও সুন্দরবনের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে না পর্যটক বহনকারী লঞ্চ, ট্রলার। পর্যটক না আসায় পূর্বে থেকে বুকিং করা ট্রিপ বাতিল করছে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। এর ফলে বিনিয়োগ করেও আর্থিক লোকসানের মুখে পর্যটকসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বন বিভাগ। যার প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট অন্য সবকিছুর ওপর। এস কে ট্যুর অপারেটর মালিক সাকী জানান, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আকর্ষণ থাকে পর্যটকদের। বিশেষ করে প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসকে ধরা হয় পর্যটন মৌসুম। এ সময়ে সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা সব থেকে বেশি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সুন্দরবনে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। তবে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে। টানা হরতাল আর অবরোধের কারণে সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। পশ্চিম সুন্দরবনের কলাগাছিয়া পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য বছর এ সময় সুন্দরবনের কলাগাছিয়াসহ সবগুলো স্পটে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকে। তবে ওই চিত্র বর্তমানে একেবারে ভিন্ন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পর্যটকরা এখন আনন্দ উপভোগ করার জন্য ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তাই সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলো এখন নীরব। ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর মালিক সাকী বলেন, ‘শ্যামনগরে সব মিলে ৫০টিরও বেশি সুন্দরবনগামী বিলাস বহুল লঞ্চ ও ট্রলার রয়েছে। এগুলোর পেছনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতির কারণে সব ট্যুর একে একে বাতিল হচ্ছে। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। এই সময়ে আমরা ট্যুরের জন্য অতিরিক্ত লোকও নিয়োগ করে রেখেছি। এদের বেতন যেমন দিতে হচ্ছে। তেমনি বিনিয়োগকৃত টাকাও ফেরত পাচ্ছি না।’ পশ্চিম সুন্দরবন বন বিভাগ সাতক্ষীরার সহকারী বনসংরক্ষক এক,এম ইকবাল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর সুন্দরবনে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছিল। আমাদের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়তেছিল। এ পরিস্থিতিতে পর্যটক না এলে আমাদের কিছুই করার নেই। আশা করি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো পর্যটক সংখ্যা বাড়বে।’ সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেছিলেন ৩ লাখের বেশি পর্যটক। যা থেকে রাজস্ব আয় হয় ৪ কোটি টাকারও বেশি। ২০২১-২২ বিদেশি পর্যটকভ্রমণ করেছেন বেশি। ওই অর্থবছরে সুন্দরবন বিভাগ পর্যটকদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছিল। কিন্তু এবার হরতাল-অবরোধে পর্যটক নেই বললে চলে। আমাদের এবার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত