ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় পতাকার আদলে সবজি খেত

জাতীয় পতাকার আদলে সবজি খেত

শেরপুরে জাতীয় পতাকার আদলে সবজি খেত সাজিয়েছেন একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশপ্রেম ছড়িয়ে দিতেই বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে এ ধরনের ভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

৮০ ফুট দৈর্ঘ্য, ৪৮ ফুট প্রস্থ আর মাঝে ১৬ ফুট বৃত্তের ব্যাসার্ধে জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি করা হয়েছে বিভিন্ন সবুজ সবজি ও লালশাক দিয়ে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় অ্যাসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা মাঠে বিভিন্ন সবজির চারা দিয়ে তৈরি করেছেন জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি। জাতীয় পতাকার আদলে চাষ করা এ সবজি খেত দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের লোকজন। স্থানীয়রা বলেছেন, শিক্ষার্থীরা শস্যখেতে জাতীয় পতাকা তৈরি করে দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। এমন কাজে তারা খুব খুশি। শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৫৮ সালে শেরপুর শহরের নারায়ণপুর এলাকায় প্রায় ৪৩ একর জমিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রাচীনতম ও একমাত্র কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ইনস্টিটিউটে বর্তমানে অধ্যয়নরত আছে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে শাকসবজি রোপণের অ্যাসাইনমেন্ট দেন শিক্ষকরা। এ সময় তাদের জাতীয় পতাকার আদলে সবজি খেতটি রোপণ করতে বলা হয়।

পরে শিক্ষকদের সহযোগিতা ও উৎসাহে শিক্ষার্থীরা ওই চিত্রকর্মটি বানাতে সফল হন। সবজি দিয়ে তৈরি করা জাতীয় পতাকার লাল বৃত্তে রয়েছে লালশাকসহ বিভিন্ন প্রজাতির শাক সবজি। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, আগামী দিনগুলোতেও তারা বৃহদাকারে বঙ্গবন্ধুর ছবি ও স্মৃতিসৌধ তৈরি করবেন। আবুল কালাম নামে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা এসেছে। সেই চিন্তা মাথায় রেখেই এ বিজয়ের মাসে আমরা সবজিখেতে জাতীয় পতাকা বানাতে সক্ষম হয়েছি। সামনের দিনগুলোতেও আমাদের এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সাদিয়া আফরিন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয় দিবসের প্রেক্ষাপট মননে ধারণ করে এ চিত্রকর্ম করেছি। শিক্ষকরা এ কাজে আমাদের ব্যাপক সহযোগিতা করেছেন। উৎসুক লোকজনের ভালোবাসা পাচ্ছি, সামনের দিনে এমন কাজ আরো বড় পরিসরে করব। বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান বলেন, এমন চিত্রকর্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রাণিত করবে। জানতে চাইলে শেরপুরের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সাইফুল আজম খান বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বর উপলক্ষে আমরা শিক্ষার্থীদের সবজি দিয়ে জাতীয় পতাকা বানানোর অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছিলাম। তারা বেশ সুন্দরভাবে এটি সম্পন্ন করেছে। ভবিষ্যতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্মৃতিসৌধের আদলে ফসলের ক্ষেত গড়ার পরিকল্পনা করছি। উল্লেখ্য, গত মৌসুমে ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী তার নিজের ফসলের মাঠে সবুজ ও বেগুনি রঙের (পার্পল লিফ রাইস) ধানের চারা দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি তৈরি করে সাড়া ফেলেছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত