বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের গারো পাহাড়ের পাদদেশীয় জেলা শেরপুরের সব কয়টি উপজেলায় শীতের তীব্রতা যেন ঝেকে বসেছে। সন্ধ্যা নামার আগেই শুরু হয় কুয়াশা পড়া। মাগরিব নামাজের পরে রাস্তায় বেড় হলে সামান্য দূরের কিছু সহজে দেখা যায় না।
এমতাবস্থায় জেলার দরিদ্র শীতার্তরা শীতে নাকাল হয়ে পড়েছেন। কর্মহীন হয়ে পড়ছেন কৃষি শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। ঠিক এই সময় শেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দরিদ্র, অসহায় শীতার্ত প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে শীত নিবারণের জন্য কম্বল বিতরণ কর্মসূচি চলছে। এর অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল্লাহ আল খায়রুমের পরামর্শক্রমে নকলা উপজেলার দরিদ্র, অসহায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন দিনের বেলায় অফিসে কাজ করেন, আর শীতের তীব্রতা বিবেচনায় কনকনে শীত উপেক্ষা করে রাতের আধারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দরিদ্র শীতার্তদের হাতে কম্বল পৌঁছে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার রাতে উপজেলার গনপদ্দী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের, চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ও গৌরদ্বাড় ইউনিয়নের পাইস্কা আশ্রয়ণ প্রকল্পের শীতার্তদের মধ্যে এবং পৌরশহরের কায়দা বাজারদী গোরস্তান এতিমখানা গিয়ে এতিম শিশুদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন। কম্বল বিতরণের সময় ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনেঁর সাথে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিহাবুল আরিফ, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও) উপসহকারী প্রকৌশলী নূর হোসেনসহ ইউএনও অফিসের বিভিন্ন স্তরের কয়েকজন কর্মচারী, পুলিশ ও আনসার বিভাগের সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, নকলা উপজেলার কোনো মানুষ যেন শীতার্ত না থাকেন, এর জন্য মান্যবর জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম স্যারের নির্দেশনায় ও উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে উপজেলার দরিদ্র, অসহায় শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে শীতার্তদের মধ্যে শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ক্ষমতাধর কর্মকর্তার এমন উদারতা ও মানবিকতা দেখে অনেক শীতার্ত দরিদ্র মানুষ খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন।
