ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিরল প্রজাতির শকুন অবমুক্ত

বিরল প্রজাতির শকুন অবমুক্ত

বান্দরবানের পর্যটন এলাকার তমাতুঙ্গির গভীর বনে বিরল প্রজাতির এক শকুন অবমুক্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এর আগে গত ১০ দিন শকুনটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শকুনটি সুস্থ হলে অবমুক্ত করা হয়। গত বুধবার বিকালে প্রশাসনিক সার্বিক সহযোগিতায় পর্যটক এলাকা তমাতুঙ্গির স্থানে শকুনটি অবমুক্ত করা হয়। গত ১০ ডিসেম্বর দুর্গম মিয়ানমার সীমান্তে বড় মদক এলাকায় থেকে রেমাক্রী ইউপি সাবেক ইউপি সদস্য লালপিয়াম বম অসুস্থ অবস্থায় বনে পড়ে থাকতে দেখে শকুনটিকে উদ্ধার করে। পরে তিনি শকুনটি থানচি থানাতে সোর্পদ করেন। এতদিন থানচি রেঞ্চের (বন বিভাগ) অধীনে চিকিৎসাধীন ছিল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। সুতরাং, আজ থেকে এ শকুনটিকে গভীর বনাঞ্চলে অবমুক্ত করে মুক্ত করা হলো। এ বিরল প্রজাতির শকুনটি এশীয় প্রজাতির এবং বাংলা শকুন নামে পরিচিত। পরিবেশ প্রকৃতিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইইউসিএন বিশ্বের মহাবিপন্ন প্রাণি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বন বিভাগের থানচি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা তৌহিদুল রহমান তগর জানান, গত ১০ ডিসেম্বর দুর্গম মিয়ানমার সীমান্তে বড় মদক এলাকায় থেকে রেমাক্রী ইউপি সাবেক ইউপি সদস্য লালপিয়াম বম অসুস্থ অবস্থায় বনে পড়ে থাকতে দেখে শকুনটিকে উদ্ধার করে। পরে তিনি শকুনটি থানচি থানাতে সোপর্দ করেন। একই দিনের থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন শুকুনটিকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুচিকিৎসা প্রদান করে। শকুনটিকে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী খাওয়ানো হয়েছে। শকুন অবমুক্ত করার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোহাম্মদ মামুন, প্রেসক্লাবের সভাপতি অনুপম মারমা, থানচি রেঞ্জের ফরেস্ট গার্ড মৃণাল কান্তি ভাওয়াল, স্পিট বোট ড্রাইভার ফরিদুল আলম, প্লান্টিশন বাগান মালিক মো. মোবারক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত অর্ধশতাধিক পর্যটকও উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলারের ধারণা, শীতে পরিযায়নের পথে শকুনটি খাবারের অভাব বা অন্য কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে ‘মহাবিপন্ন’। বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আইইউসিএনের হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে। জোহরা মিলা বলেন, পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য সংকট এবং বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে। শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানোর পাশাপাশি দেশের মানুষ অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু হতে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে।

আইইউসিএনের মাধ্যমে বন অধিদপ্তর শকুন রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাখিটির প্রতি আমাদের সদয় হওয়া খুবই প্রয়োজন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত