কেশবপুরে সাগরদাঁড়িতে ১৯ জানুয়ারি থেকে ৯ দিনের মধুমেলা

প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের মহানায়ক অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবক্তা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ৯ দিনব্যাপী মধুমেলা। যশোরের কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ পাড়ের তীর্থভূীম সাগরদাঁড়িতে এ আয়োজনকে ঘিরে মধুভক্তদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী ও মধুমেলা অনুষ্ঠিত হবে ১৯ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মহাকবির জন্মদিন ২৫ জানুয়ারি হলেও ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে এসএসসি পরীক্ষার কারণে ১৯ জানুয়ারি থেকে মধুমেলা শুরু হচ্ছে। সাগরদাঁড়িতে মধুমেলাকে ঘিরে জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহ থেকে মেলার মাঠে সাজবে বর্ণালী সাজে। উদ্বোধনীর দিন থেকে প্রতিদিনই বিকেল ৩টা থেকে মধুমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। মধুসূদনের সৃষ্টি, সাহিত্য ও কর্মজীবনের উপর বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেবেন দেশের খ্যাতিনামা কবি, সাহিত্যিক, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। আলোচনাসভা শেষে একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন দলগত সংগীতানুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের খ্যাতিমান কণ্ঠ শিল্পীরা এখানে সংগীত পরিবেশন করবেন। প্রতিবারের ন্যায় মেলায় আগতদের মাঝে মেলা আকর্ষণীয় করে তুলতে মেলার উন্মুক্ত মঞ্চে যাত্রা, সার্কাস, ইজ্ঞিন ট্রেন, মৃত্যুকূপ, নাগোর দোলা ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া মেলার মাঠে বসবে নানা ধরনের আকর্ষনীয় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মধু জন্মবার্ষিকী ও মধুমেলা অশ্লীলতামুক্ত হবে। মধুমেলার মাঠে অনুপ্রাণিত হবেন লাখো মধুভক্তরা। এদিকে ব্রিটিশ ভারতের প্রথম জেলা যশোরের কেশবপুরে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম ধন্য সাগরদাঁড়িতে মধুসূদন সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি চলে আসছে গত কয়েক বছর ধরে। প্রতিবারের ন্যায় সরকারি টেণ্ডারের মাধ্যমে মেলার ইজারা দিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। আয়োজক কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার অপসংস্কৃতি চলতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মধুমেলাতে সব কিছু শালীনতার মধ্য দিয়ে উপসাপন করার জন্য কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে। গত ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মধুমেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল মতবিনিময় সভা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, কেশবপুর উপজেলা সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম আরাফাত হোসেনসহ সাংবাদিকগন, বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর বিকালে যশোর জেলা ও কেশবপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তুহিন হোসেনের সভাপতিত্বে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। মধুমেলা প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা সাদেক, উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার, উপজেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুমার কুন্ডু, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রুপালী রানী, কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ-উজ-জমান খানসহ আওয়ামী লীগের নেত্রীবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেত্রীবৃন্দ। ২৭ জানুয়ারি মধুমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে গুনী ব্যক্তির হাতে মধুসূদন দত্ত স্বর্ণপদক-২০২৪ তুলে দেয়া হবে। ৮০ দশকে মধু কবির জন্মভূমি সাগরদাঁড়ির ‘পৈত্রিক বসতবাড়ি’ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সার্বিক পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পরে কিছুটা ঘষামাজা করে পুরাতন জীর্ণশীর্ণ ভগ্নদশা থেকে কিছুটা বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯৭ সালে কবির জন্মজয়ন্তী ও মধুমেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাগরদাঁড়িতে পর্যটন কেন্দ্র ও মধুপল্লী গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যার প্রেক্ষিতে পর্যটনের ১টি রেঁস্তোরা কেন্দ্র ও মধুপল্লী নির্মাণ করা হয়।