ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দিনাজপুরে রবিশস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

দিনাজপুরে রবিশস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

দিনাজপুরে এবার শীত কম। ডিসেম্বর মাসে যে পরিমাণ শীত পড়ে এবার তার ব্যতিক্রম। রাতে একটু শীত অনুভূত হলেও দিনে চড়া রোদের কারণে বোঝাই যায় না ঋতুচক্রে শীতকাল চলছে। শীত কম পড়ায় রবিশস্য উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে শীতের দাপট না থাকায় কমে গেছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ২০২১ সালে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে নেমে আসে। ২০২২ সালে একই সময় তাপমাত্রা ছিল ১২-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। চলতি ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে তাপমাত্রা ছিল ১০-১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শেষ দশকে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। ২৩ ডিসেম্বর ১৪.৬, ২৪ ডিসেম্বর ১৩.৪ ও ২৫ ডিসেম্বর ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছরই আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে। শীত নির্দিষ্ট সময়ের পরে আসছে। এবার আবহাওয়ার বড় তিনটি পরিবর্তন দেখা গেছে। আর তা হচ্ছে দেরিতে শীত আসা, শীতের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়া এবং রাতে শীত বেশি ও দিনে গরম। দিনাজপুরের রাজবাড়ী এলাকার মুসল্লি হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আকরাম হুসাইন বলেন, ‘ভোরবেলা অন্যান্যবার যেরকম শীত ও কুয়াশা দেখা যেত এবার তেমনটি নেই।’ রিরল উপজেলার কৃষক মতিউর রহমান আড়াই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার খুব একটা শীত নেই। তাই আলুর গাছ ভালো হলেও রাতে শীত দিনে গরমের কারণে আলুর আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে। আবার যদি হঠাৎ করে কুয়াশা ও শীত বেশি পড়ে তাহলে আলুখেতে নাবিধসা বা মোড়ক রোগ দেখা দিতে পারে।’ দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. আনিছুজ্জামান জানান, জেলায় এবার এক লাখ ৭২ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমিতে রবিশস্য চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুজ্জামান বলেন, রবিশস্যের জন্য যে পরিমাণ শীত প্রয়োজন তা এখনো নামেনি। শীত বেশি হলে শীত পছন্দকারী রবিশস্যের উৎপাদন বেশি হয়। তবে দিনাজপুরে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এখনো শীত কম। তিনি বলেন, শীত কম হলে রবিশস্যের দানা বা আকার ছোট হয়ে যায়, বীজের জন্য চাষ করা সবজির পুষ্প মঞ্জুরি ভালো হয় না, পেঁয়াজের ফুল আগেই চলে আসে। সবমিলিয়ে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শহরের গরম কাপড়ের বাজার হিসেবে খ্যাত দিনাজপুর গোর-এ শহীদ ময়দানে কাপড়ের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খুব একটা বেচাকেনা নেই। দোকানদাররা অলস সময় পার করছেন। সুমন ইসলাম ও সানি আলম নামের দুই বিক্রেতা বলেন, এবার শীত অন্যান্যবারের তুলনায় কম। এখনো শীত নামেনি। তাই গতবারের চেয়ে অর্ধেকেরও কম বেচাকেনা হচ্ছে। ক্রেতা নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত