ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গরম কাপড়ের দোকানে ভিড়

গরম কাপড়ের দোকানে ভিড়

দুই দিনের হঠাৎ বৃষ্টির পর থেকে উত্তরের হিমেল বাতাসে বগুড়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে দিনে-রাতে ঘন কুয়াশা। আর শীতের এই তীব্রতা থেকে বাঁচতে বগুড়া শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন মার্কেটে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির পর শীত বেড়ে যাওয়ায় মোটা কাপড় কেনার হিড়িক পড়েছে। গত সোমবার শহর ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় শপিংমল ও ফুটপাতে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। শিশু ও বয়স্কদের কাপড় কেনার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে শপিংমলগুলোতে দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ ঝুঁকছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। গত বছরের চাইতে এবছর দাম একটু বেশি হওয়ায় শীতবস্ত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন দরিদ্র মানুষ। ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। এবছর আগেভাগেই ক্রেতার ভিড় বাড়ায় বিক্রেতারাও বেশ খুশি। বগুড়া শহরের সাতমাথা, স্টেশন রোড, শেরপুর রোড, নবাববাড়ী রোড, কাঁঠালতলাসহ হকার্স মার্কেটে কম দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের কাপড়। বিক্রেতারা জানান, জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর, কোর্ট, মাফলার, হাতমোজা ও পা মোজা বেশি বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতগুলোতে কম মূল্যে নতুন কাপড়ও বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক, রিকশা-ভ্যানচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বেশি আসছেন ফুটপাতগুলোতে। শহরের সাতমাথা এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন জানান, ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়েছে। আমরাও চাহিদা মতো কাপড় দোকানে তোলার চেষ্টা করছি। বড়দের কাপড়ের পাশাপাশি শিশুদের কাপড়ও বেশ বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, শীতের কাপড় কিনতে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরা। বিশেষ করে ছুটির দিনে বেশি ভিড় হয়। এছাড়াও প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে শীতের কাপড়। আমরা শীতের মৌসুমে এই পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করি। শীতের কয়েক মাসের আয় দিয়ে আমাদের সারা বছর চলে। ১৫ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। এখানে গার্মেন্টের সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। চাদর বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। হকার্স মার্কেটের পুরোনো কাপড় বিক্রেতা জুলহাস শেখ বলেন, দোকানে প্রচুর ভিড়। আমরা ক্রেতাদের চাহিদামতো কাপড় আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু এ বছর পুরাতন কাপড়ের বেল্টের দাম অনেক বেশি। অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে এবার শীতের কাপড়ের চাহিদাও বেশি। গভীর রাতেও ক্রেতাদের ভিড় কমছে না। বাধ্য হয়েই রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে। প্রকারভেদে জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। ফুটপাতে পুরাতন জ্যাকেট কিনতে আসা ফরিদ জানান, কুয়াশার ভেতরে ভোরবেলায় রিকশা নিয়ে বের হতে হয়। শীতে একেবারে কাহিল হয়ে যাই। ভাবছিলাম দুই থেকে আড়াইশ’র মধ্যে একটা জ্যাকেট কিনব। এসে দেখি দাম বেশি। তাই ৩৫০ টাকা দিয়ে জ্যাকেটটা কিনলাম। হকার্স মার্কেটে কাপড় কিনতে আসা হাসান আলী জানান, এটা গরিবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত। এখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গরম কাপড় কিনতে পারেন। কাপড়ের দাম হাতের নাগালে থাকায় সবাই সাধ্যমতো গরম কাপড় কিনতে পারেন। তিনি আরও জানান, নিউমার্কেট, রানার প্লাজা, অন্যান্য শপিংমলের ভেতর থেকে কিনতে গেলে দাম অনেক বেশি পড়ে, তাই বাইরে থেকে কিনছি। প্রতি বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি নিচ্ছে। শীতবস্ত্র যেহেতু লাগবেই তাই টাকার কথা চিন্তা করছি না। নিম্ন আয়ের মানুষরা জানান, বড় শপিংমল ও শোরুমে সুন্দর কাপড় থাকলেও দাম তাদের সামর্থ্যরে বাইরে। এজন্য তারা ফুটপাতের দোকানে আসছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত