আ.লীগ বনাম আ.লীগের লড়াই

জাতীয় সংসদের ১৫৮ নেত্রকোনা-২ (বারহাট্টা-নেত্রকোনা) আসনে জমে উঠেছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের নির্বাচনি লড়াই। বর্তমান সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা নিয়ে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির এক নম্বর সদস্য। তার বিপরীতে লড়ছেন কমিটিতে তালিকার তিন নম্বরে থাকা সদস্য আরিফ খান জয়। তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সদস্য নির্বাচীত ও পরবর্তীতে যুব ও ক্রীড়া উপ-মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল নিয়ে করছেন নৌকার মোকাবিলা। প্রচার-প্রচারণায় দাবি করছেন তিনিও আওয়ামী লীগেরই লোক। অবস্থা দৃষ্টে অনেকেই বলছেন আসনটিতে চলছে আওয়ামী লীগ-আওয়ামী লীগ লড়াই, যে লড়াই দৃষ্টি কেড়েছে সমগ্র জেলাবাসীর। জেলায় মোট ৫টি আসন রয়েছে। আরিফ খান জয় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই আমার প্রার্থী হওয়া। গণভবনে আমরা প্রায় সাড়ে তিনহাজার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেছেন যে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে। নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মহলে অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি। জয় আরো বলেন, আমার নেতা শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের বলেই দিয়েছেন- আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবে। ফলে, হাজার হাজার নেতাকর্মী আমার পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। কারণ তারা জানেন, আমাকে ভোট দিলেও শোখ হাসিনার হাতই শক্তিশালী হবে। মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা, শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকা। আমি শেখ হাসিনার প্রতিনিধি, নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছি। যারা অন্য প্রতীক নিয়ে এসেছেন, তারাও বলেন যে, তারা আওয়ামী লীগের। তারা আওয়ামী লীগের নয়, তারা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী। তাদের ভোট দিলে আওয়ামী লীগের কোনো উপকারে আসবে না, শেখ হাসিনার উপকারে আসবে না। কারণ, সারা দেশে কত ভোট পড়েছে এবং শেখ হাসিনা কত ভোট পেয়েছেন, তা আন্তর্জাতিক মহলে হিসাব করা হয়। এই হিসাবের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ প্রধানমন্ত্রীর স্থান নির্ধারণ করে থাকে, দেশের অবস্থান নির্ণয় করে থাকে। আমাকে যে ভোট দিবেন, সারা দেশে নৌকা যে পরিমাণ ভোট পাবে, সব ভোটই হবে শেখ হাসিনার। জেলা নির্বাচন অফিসারের দপ্তর সূত্র জানায়, নেত্রকোনা-২ আসনে মোট ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯১৭ জন ভোটার রয়েছেন। তারমধ্যে নেত্রকোনায় ৩ লাখ ১০ হাজার ১৬৭ ও বারহাট্টায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৫০ জন। আসনটিতে লড়ছেন মোট ৭ জন প্রার্থী।