মানিকগঞ্জে জমে উঠেছে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা 

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসনে মোট ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুইটিতে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে জমজমাট প্রচার-প্রচারণা চলছে। অন্যটিতে নির্বাচনি আমেজ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো উত্তেজনা বা সহিংসতা নেই। তবে রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে নির্বাচনি প্রচারণা করায় প্রার্থীকে সতর্ক করেছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১২ লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৬ লাখ ৩২ হাজার ৯০৮ ও মহিলা ভোটার ৬ লাখ ২৯ হাজার ৫৩২ জন। মানিকগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসনের দুইটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী রয়েছে। মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি মমতাজ বেগম। মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান এমপি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক। মানিকগঞ্জ-১ আসনে বর্তমান এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেখানে নৌকা পেয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। সেখানে মহাজোট সমর্থিত জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকে নির্বাচন করছেন জহিরুল আলম রুবেল। মানিকগঞ্জ-২ আসনটিতে বর্তমানে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোট ১০ জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মমতাজ ও স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করা ট্রাক প্রতীকের দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সঙ্গে। গত বুধবার প্রচারণায় বাধা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দেওয়ান জাহিদ। সেখানকার সহিংসতা নিয়ে থানায় মামলাও হয়েছে। মানিকগঞ্জ-১ আসনেও টানটান নির্বাচনি উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে ৪ জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে স্বতন্ত্র থেকে ঈগল প্রতীক নিয়ে জাহিদ ও মহাজোট সমর্থিত লাঙল প্রতীকের রুবেল। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করায় সেখানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বিতায় ভুগছেন। একদিকে দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের সুখ ও দুর্দিনের কান্ডারি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সালাউদ্দিন মাহমুদ অন্যদিকে মহাজোটের (জেপি) প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেল। যদিও সেখানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি একসঙ্গে মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। 

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন প্রার্থী যে কয়জনই থাক মূল প্রতিদ্বন্দি¦তায় থাকবে নৌকার প্রার্থী জাহিদ মালেক ও উদীয়মান সূর্য নিয়ে গণফোরামের প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল। নির্বাচনি উত্তাপ এ আসনে না থাকলেও প্রচারণা চলছে দিন-রাত। ২৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে নির্বাচনি প্রচারণার অভিযোগে জাহিদ মালেককে সতর্ক করা হয়। এবিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হলে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেককে সতর্ক করেন। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আকতার ‘আলোকিত বাংলাদেশ’কে বলেন, নির্বাচনি পরিবেশ খুবই সুন্দর। প্রার্থীরা দিন-রাত ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছে। তারা নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনি পরিবেশ সন্তোষজনক।