তীব্র শীতে অসহায় দিন কাটাচ্ছেন ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

তীব্র শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়া বইছে সর্ব উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে। শীত বস্ত্রের অভাবে অসহায় জীবনযাপন করছে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া ছিন্নমূল ও দিন মজুর শ্রেণির হাজার হাজার মানুষ। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারি সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার প্রত্যাশা ভুক্তভোগী অসহায় মানুষজনদের। এ মাসের শুরুতেই ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাশে সীমান্তবর্তী লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এবারের শীতে কাবু হয়ে পড়েছে ছিন্নমূল, তিস্তা-ধরলা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের দরিদ্র্য পরিবার ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষেরা। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী, শিশু-বৃদ্ধ ও শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষজন। এসব মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে অস্বাভাবিক ঠান্ডায় জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যেও মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। ফলে, আয় কমে গেছে দিন মুজুরদের। হতদরিদ্র্য এ সকল শীতার্ত মানুষের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাহায্য। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে একবারে অপ্রতুল বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। জেলা-উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ঠান্ডা নিবারণের জন্য পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই তা কিনতে পারছে না। সব মিলিয়ে শীত ও হিমেল হাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, শীতে বৃদ্ধ-শিশুরা সর্দিজ্বর, আমাশয়, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, এজমাসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় রাতে রাস্তাঘাটে স্বল্প পরিমাণে যানবাহন চলাচল করছে। সবমিলে গত কয়েক দিনে শীতে কাবু করে ফেলেছে জেলাবাসিকে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় আকাশ। প্রতিদিন বিকাল থেকে শুরু হয় বৃষ্টির মতো শিশির পড়া। বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাহিরে যায় না। ফলে, দিন মুজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো ঠান্ডায় কাজ কর্ম না করে অলস সময় কাটাচ্ছে ঘরে বসেই। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত দেশের তৃতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর বুড়িমারীতে খেটে খাওয়া শ্রমিক আলী মিয়া, হারুন মিয়া ও সুকুর আলীসহ কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, এবার যেভাবে ঠান্ডা পড়তেছে তাতে হামরা (আমরা) কাজে যেতে পাড়ছি না। কোনো দিন যে শীত শেষ হইবে কবারে পাই না (বলতে পাড়ি না)। শীতার্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে শুধু সরকারি সাহায্যই যথেষ্ট নয় বেসরকারি উদ্যোগও জরুরি- এমনটাই প্রত্যাশা শীতার্ত এসব মানুষের। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের অফিস সূত্রে জানায়, শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।