ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে সৈয়দপুর

সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে সৈয়দপুর

তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় নীলফামারীতে দিন দিন বাড়ছে শীতের প্রকোপ। গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশায় রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত আচ্ছন্ন থাকছে। এতে করে দিনের বেলায়ও যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। আকাশপথেও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এদিকে দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় রাস্তায় কমেছে মানুষের চলাচল। উষ্ণতার আশায় কেউবা আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিচ্ছেন আবার কেউ ভিড় জমাচ্ছেন চায়ের দোকানে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। এতে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এমন আবহাওয়ার কারণে অফিসগামী ও শ্রমজীবী মানুষ কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। গতকাল সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে সৈয়দপুরে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সৈয়দপুরের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সৈয়দপুরে আজ এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারা দেশেরও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সৈয়দপুরের আকাশে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। এই ঘন কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে। গতকাল সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথগুলো। গাছের পাতা, ফসলের খেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশিরবিন্দু। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কের যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কাজের সন্ধানে। শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় কথা হয় ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক ইউনুস আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডায় মানুষজন বের হচ্ছে কম। কামাই নাই, আমাদের প্রতিদিন রোজগার করে খেতে হয়। একদিন কামাই না করলে বউ-বাচ্চা নিয়া না খেয়ে থাকতে হবে। ঠান্ডায় মানুষ রিকশায় উঠতেও চায় না।’ রিকশাচালক সোলেমান আলী বলেন, ‘সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ভাড়া পাই নাই। রিকশা চালাইলে হাত-পা অবশ হয়া যায়। আগে তো প্যাডেল রিকশা ছিল, চালাইলে শরীর গরম হইতো। ঠান্ডার কারণে মানুষজন রিকশায় উঠবার চায় না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতাও পাই নাই।’ রামনগর এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই শীতের কারণে কোনোকিছু করা যাচ্ছে না। কোনো প্রকার কাজকামও নাই। কীভাবে যে সংসার চালাবো বুঝতে পারতেছি না।’ এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে। নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসিবুর রহমান জানান, জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় ২৫ হাজার পিস কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনো প্রায় ৫ হাজার মজুদ আছে। প্রয়োজনে আরও চাহিদা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত