দিনাজপুরে শৈত্যপ্রবাহে নাকাল জনজীবন

তাপমাত্রা নামল ৯ ডিগ্রিতে

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় হিমেল বাতাস সঙ্গে ঘন কুয়াশা। এতে করে দিনের বেলায়ও যানবাহনে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে অঞ্চল। গত কয়েকদিন থেকে সূর্যে দেখা মিলছে না। অটোচালক শিমুল রায় বলেন, শীতের কারণে শহরে লোকজনের চলাচল অনেক কমে গেছে। আগে যেখানে দিনে ৭ থেকে ৮ শত টাকা আয় হতো এখন ৫০০ টাকাই হয় না। জমার টাকা দেওয়ার পর বাজার করার টাকাই থাকে না। প্রতি বছর শীতের সময় কষ্ট করে চলতে হয়। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গতকাল দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর বাতাসে আর্দ্রতা ১০০ ভাগ। চলিত বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া এই মাসে জেলার ওপর দিয়ে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। কৃষক জুবায়ের হোসাইন বলেন, কয়েকদিন থেকে ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে খেতে কাজ করাই যাচ্ছে না। অনেকটা বেলায় কাজে গেলেও বিকেল হতে না হতেই বাসায় ফিরতে হচ্ছে। শহরের রামনগর এলাকার ভ্যানচালক ইকবাল হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহ যে শীত শুরু হয়েছে বেলা ১১টার পর মানুষ বাড়ি থেকে বের হয় সন্ধ্যা হওয়ার আগে বাসায় ফেরে। আগে দিনে চার থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম হত। শীত বেশি হওয়ায় এখন দিনে দুই থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। বাজারের সবকিছুর দাম বেশি সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।

এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষরা বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত শনিবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ১০০ ভাগ। দিনাজপুরে গতকাল থেকে ১০ ডিগ্রিতে থেকে তাপমাত্র ৯.৬ ডিগ্রিতে নেমেছে। এই তাপমাত্রায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে বলা যেতে পারে। তবে আগামীকাল থেকে শুরু হতে পারে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। জেলা সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। হঠাৎ করেই দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বন বিশেষভাবে প্রয়োজন। পাশাপাশি কোনো শিশু আক্রান্ত হলে তাকে অন্য শিশুদের থেকে আলাদা রেখে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।