কৌশল পরিবর্তন করে তিনগুণ ফলন বৃদ্ধি

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ড্রাগন চাষে ‘লাইট ইনডোর্স পদ্ধতি’ ব্যবহারে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩ গুণ। দেশে প্রথমবারের মতো এমন পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ স্থানীয়ভাবে বেশ প্রসংশিত হচ্ছে। আর ফসলের খেতে লাইটিংয়ের ফলে রাতের আধারে অপরূপ এক সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়। যা দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন বাগানে। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলার চারাতলা গ্রামের কৃষক বিপ্লব জাহান নতুন এই পদ্ধতি সবার মাঝে পরিচিত করছেন। তিনি শুধু নামে বিপ্লব নয়, কাজেও বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রমাণ দিয়ে ফেলেছেন। মাত্র ৩ বছর আগে চারাতলা গ্রামের মাঠের ১১ বিঘা জমিতে গড়ে তোলেন ড্রাগন বাগান। তাতে তিনি ড্রাগনের ফল আসার মৌসুমে ভালোই ফল পাচ্ছিলেন। এরপর তিনি চীন থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ২৮০০ এলইডি লাইট এনে লাইট ইনডোর্স পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন। যা অসময়ে স্বাস্থ্যসম্মত ড্রাগন ফল উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে লাইটগুলো জ্বলার পর অপরুপ সৌন্দর্যে রূপ নেয়। এমন ভিন্নতা দেখতে প্রতিদিন জড়ো হচ্ছে শতশত মানুষ। বৈচিত্র্যময় চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জায় গাঁ ভাসাতে বিভিন্ন জেলা থেকেও আসছে দর্শনার্থী। দর্শনার্থী আহমেদ নুহায়েদ আনসারী তাজ জানান, এমন সৌন্দর্য সত্যিই আগে দেখিনি। শোনার পর চলে এসে দেখি যে কেউ অভিভূত হতেই হয়। বাগানের কর্মচারী মনিরুর ইসলাম জানান, যে সময় ড্রাগনের কোনো চাষ থাকে না, সেই অসময়ে এমন উৎপাদন সত্যিই অভিনব ঘটনা। আমরা এখানে প্রায় ১৫ জন কাজ করি। রাতে একজন নাইট গার্ড বাগান পাহারা দেয়। ঝিনাইদহ হরিণাকুণ্ড চারাতলা ড্রাগন ফ্রুটস অ্যান্ড এগ্রোর প্রোপাইটার বিপ্লব জাহান জানান, ইউটিউব দেখে মূলত এ পদ্ধতির খবর জেনেছি। তারপর শুরু করে ব্যাপক ফলন পাচ্ছি। প্রাথমিকভাবে বড় অংকের টাকা লাগলেও লাভও ৩ গুণ। সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা ও রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত মোট ৯ ঘণ্টায় দুই দফা লাইটগুলো জ্বলে। শীতকালে দিন ছোট হয়, তাই দিনের আলো কম হয়। ড্রাগন বেড়ে ওঠে মূলত দিনের আলোয়, তাই এ পদ্ধতিতে চাষ করলে রাতেও ড্রাগনের বেড়ে ওঠা স্বাভাবিক থাকে। তিনি আরো জানান, বিপ্লবের এই বাগানে ৩৩ হাজার ড্রাগনের গাছ রয়েছে। যা থেকে তিনি গত বছর বিক্রি করেছেন ৩০ লাখ টাকার ড্রাগন।

দেশের কোথাও এখন ড্রাগন ফলের উৎপাদান না থাকলেও তার বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে ড্রাগন ফল। যা নিয়মিত ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রিও হচ্ছে। এ বছর ৫০ হাজার মেট্রিকটন ড্রাগন উৎপাদন হবে বলে তিনি জানান।