ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গোলের রসের মিষ্টি গুড়

চাষিদের ভাগ্যবদল
গোলের রসের মিষ্টি গুড়

গোল গাছের রস সংগ্রহ করে বড় একটি পাত্রে রেখে দীর্ঘ সময় আগুনে উনুন দিয়ে তৈরি করা হয় মিষ্টি গুড়। এই গুড় এতটাই জনপ্রিয় হয়ে গেছে যে ভারতের কলকাতাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। ডায়াবেটিসের রোগীরাও এই গুড় খেতে পারবেন। প্রতিদিন রস থেকে মিষ্টি গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন প্রান্তিক গ্রামের গোল চাষি অমৃত হাওলাদার। এ কাজে তার মা ও স্ত্রী সাহায্য করেন। শীতের মৌসুমের কয়েক মাস গোল গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। বরগুনার তালতলী উপজেলার করইবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেহেলা গ্রামের গোল চাষি অমৃত হাওলাদারের ৮ সদস্যের পরিবার। জীবিকার তাগিদে গোল গাছের রস দিয়ে গুড় তৈরি করে বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত করেন। নিজের কোনো জমি জমা না থাকায় অন্যের গোল গাছ চুক্তিটি নিয়ে প্রতি বছর শীত মৌসুমে এ কাজ করেন তিনি। অমৃত হাওলাদারের মতো ওই এলাকায় ১৫০ জনের বেশি গোল চাষিদের সংসার চলছে রস ও গুড় বিক্রি করে। এতে বেহেলা গ্রামে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকার বেশি গুড় বিক্রি হচ্ছে। বরগুনার তালতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে গোল গাছের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সবচেয়ে বেশি গুড় আসে বেহালা গ্রাম থেকে। এক মৌসুমে প্রায় ১২ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়। গোল চাষি অমৃত হালদার বলেন, প্রথমে রসটি সংগ্রহ করে আগুনে জাল দিয়ে গুড় তৈরি করি এ সময় যদি কোনো ময়লা থাকে তা ছাকনির মাধ্যমে পরিষ্কার করে নির্ভেজাল মিষ্টি গুড় তৈরি করি। পরে এটি বাজারজাত করি। এ বছর ১২০টি গোল গাছ রেখেছি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে। প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এই রস বা গুড় বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। গোল চাষিদের সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতার দাবি করেন তিনি। স্থানীয় চাষি কৃষ্ণকান্ত মিস্ত্রি বলেন, এই গোলের গুড় বিক্রি করে এ গ্রামে বছরে কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়। গোলের রস থেকে মিষ্টি গুড় তৈরি হয় শুধু এই বেহালা গ্রামে। আমাদের আত্মীয়স্বজন তারা ভারতে খেতে নিয়েছেন সেখানেও খুব ভালো সুনাম কুড়িয়েছে। বনানী অধিকারী নামের আরেকজন বলেন, এখানকার চাষিদের সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা করলে তারা আরও বেশি স্বাবলম্বী হতে পারবে। এখানকার অনেক চাষি গাছের সঠিক পরিচর্যা করতে পারে না। সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পেলে আরো বেশি স্বাবলম্বী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন হাওলাদার বলেন, উপজেলার বেহলার গ্রামের গোল চাষের ইতিহাস শতবর্ষ যাবৎ চলছে। এখানকার গোলের গুড় খুব সুস্বাদু। স্থানীয় গোল চাষিরা এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত